ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপটা যেন ক্রমেই বাড়ছে। এক দিকে দেশটির একের পর এক অঞ্চল দখলের দাবি করছে রাশিয়া, অন্যদিকে এবার স্বয়ং যুক্তরাষ্ট্রই কিয়েভ নিয়ন্ত্রিত একটি এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেস্ক এলাকাতে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করতে চায় ওয়াশিংটন, যা কিনা আবার দখলে নিতে আগ্রহী ক্রেমলিন। কিয়েভের মতে, এটি নীতিগতভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং ভবিষ্যতে রুশ আগ্রাসনের সুযোগ তৈরি করে দেবে।
এদিকে সংকটে সমাধানে মিত্রদের সাথে জেলেনস্কির বৈঠক চলমান। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে ৩৪টি মিত্র দেশ নিয়ে গঠিত 'কলিশন অব দ্য উইলিং'-এর সর্বশেষ বৈঠকে ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি হালনাগাদ ২০-দফা পরিকল্পনা পাঠিয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং পুনর্গঠনের প্রস্তাব সম্বলিত পৃথক নথিও পাঠিয়েছে। এছাড়া তিনি আরও বলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে ইউক্রেনে নির্বাচন দেয়ার জন্য যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের জন্য সম্ভাব্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কথা হয়েছে। আমরা একটি কাঠামোগত নথি নিয়ে কাজ করছি। এটি অবশ্যই যথেষ্ট কার্যকরী হতে হবে। এই নথিগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দ্বারা অনুমোদিত হওয়া উচিত। আর যদি এখন নির্বাচনের প্রয়োজন হয়, তাহলে অন্তত নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং ভোটদানের সময় যুদ্ধবিরতি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:
এদিকে ইউক্রেন সংকট নিরসনে, একের পর এক, কোনও আশানুরূপ ফল ছাড়া বৈঠকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চরম বিরক্ত বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এক রকম বিরক্তি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অগ্রগতির কোনও সম্ভাবনা থাকলে, এই সপ্তাহে ইউরোপে আলোচনায় তিনি একজন প্রতিনিধি পাঠাবেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যদি আমরা মনে করি যে এই বৈঠকে ভালো সম্ভাবনা রয়েছে, তবে আমরা শনিবার ইউরোপের এই আলোচনায় অংশ নেব। আমরা বেশি সময় নষ্ট করতে চাই না, এর নেতিবাচক দিক ছাড়া আর কিছুই নেই।’
এদিকে রাশিয়া আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ন্যাটোভুক্ত কোনো একটি দেশে হামলা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুতে।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুতে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা রাশিয়ার পরবর্তী টার্গেট। আমাদের দাদা-দাদি কিংবা প্রপিতামহ যেই মাত্রার যুদ্ধ মোকাবিলা করেছেন, তেমনটার জন্য আমাদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে।’
এদিকে সংকট নিরসনে চলমান শত প্রচেষ্টার মাঝেই সংঘাত চলছে। দোনেস্ক শহরের সিভার্স্ক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের পালটা পালটি দাবি করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন। রাশিয়া বলছে, দোনেস্কের রিভার্স্ক অঞ্চল ও দুটি আবাসিক এলাকা পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে। আর ইউক্রেন বলছে, রাশিয়ার সামরিক অভিযান প্রতিহত করে রিভার্স্ক অঞ্চল এখনও তারা দখলে রেখেছে।
এছাড়া সুমি অঞ্চলের একটি গ্রামে রাশিয়ার হামলায় দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছে জানা গেছে।





