বিদেশে এখন
0

তৃতীয় অর্থনীতির দেশ হতে চায় ভারত

জ্বালানির উচ্চমূল্যে বেকায়দায় জাপান

জাপানকে টপকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে জার্মানি। এজন্য অপ্রত্যাশিতভাবে মোট দেশজ উৎপাদন কমে যাওয়া, মুদ্রার দরপতন ও মূল্যস্ফীতিসহ নানামুখী সংকটকে দায়ী করছে টোকিও। জাপানের তুলনায় জার্মানির মোট দেশজ উৎপাদন বাড়লেও ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে জ্বালানির উচ্চমূল্য দেশটিকে বেকায়দায় ফেলেছে। এই সুযোগে দ্রুতই জার্মানি-জাপানকে পেছনে ফেলে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে চায় ভারত।

করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে বিপাকে ফেলেছে। একইসঙ্গে ধুঁকছে শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলো। যে তালিকায় নাম আছে চীন, জাপান ও জার্মানির। এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক থাকায় সংকটের মাত্রাও গভীর হচ্ছে। এই যেমন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের চলমান মন্দা হাওয়া বিশ্বের বহু দেশকে প্রভাবিত করছে।

চীনের অর্থনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকায় সবচেয়ে বিপদে রয়েছে জাপান। কারণ, প্রতিবছর বেইজিংয়ে প্রচুর পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে টোকিও। দিন দিন সেই রপ্তানি বাণিজ্যেও পতন দেখা দিচ্ছে। তার ওপর ডলারের বিপরীতে জাপানের মুদ্রা ইয়েনের দরপতন তো আছেই। যার ফলে দেশটির আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সবমিলিয়ে দেশটির অর্থনৈতিক চালিকা শক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি খাতও হুমকির মুখোমুখি। এছাড়া শ্রম ঘাটতি, জন্মহার হ্রাস এবং বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির সমস্যায় কঠিন বিপদে জাপান। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দাম তো আছেই।

জাপানের এক নাগরিক বলেন, ‘পেট্রোল ও বৈদ্যুতিক বিল বেড়ে গেছে। তাই গাড়ি যতটা সম্ভব না চালানোর চেষ্টা করছি।’

আরেক নাগরিক বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে আমার বেতন কমে গেছে। তাই টাকা বাঁচানোর জন্য আমি জামা-কাপড় কেনা এবং বাইরে খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।

জাপানের অর্থনীতিতে পাহাড় সমান সমস্যা এসে ভর করায় দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন নিম্নমুখী। এতে ২০২৩ সালে দেশটির জিডিপি'র পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি ডলার। বিপরীতে জাপানকে ছাড়িয়ে জার্মানির মোট দেশজ উৎপাদন দাঁড়ায় সাড়ে ৪ লাখ কোটি ডলার। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মর্যাদা হারায় জাপান। আর সেই জায়গাটির দখল নেয় চতুর্থ অবস্থানে থাকা জার্মানি।

পরিসংখ্যান বলছে, জাপানকে টপকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মুকুট নিজেদের করে নেয়া জার্মানির সংকটও কম নয়। টোকিওর মতোই নানা সংকটে জর্জরিত বার্লিন। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় জার্মানির উৎপাদন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার জন্য সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গাড়িশিল্প। এতে এই শিল্পে নতুন নতুন উদ্ভাবন কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে দেশটির গাড়ি বিক্রিও কমে গেছে। তবে ডলারের বিপরীতে কিছুটা স্থিতিশীল ইউরো অঞ্চলের মুদ্রা।

এদিকে জাপান ও জার্মানির দুর্বলতাকে পুঁজি করে ৫ম অবস্থান থেকে বিশ্ব অর্থনীতির তালিকায় আরও উঠে আসতে চায় ভারত। ২০৩০ সালের আগেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার স্বপ্নে এগুচ্ছে দেশটি। ইতোমধ্যে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছে ভারত।