বিদেশে এখন , মধ্যপ্রাচ্য
যুদ্ধ
0

গাজায় অনুদান স্থগিত করলো ১০টির বেশি দেশ

২৬ হাজার প্রাণহানি ছাড়ানোর পর গাজায় অনুদান স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০টিরও বেশি দেশ। অনুদান স্থগিত করায় গাজার বাসিন্দারা চরম মানবিক সংকটে পড়েছেন।

গাজার বাসিন্দারা বলেন, 'গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এই ষড়যন্ত্র আমাদের জন্য মৃত্যুদণ্ড। আমরা আগে থেকেই অনাহারে ভুগছি। গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ'র কাজ বন্ধ হয়ে গেলে আমরা স্রেফ মরে যাবো। না খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকবো। খাবার, পানিসহ আমাদের পুরো জীবনই ইউএনআরডব্লিউএ'র সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। ডায়াবেটিস আছে, উচ্চ রক্তচাপেও ভুগছি। চিকিৎসা কোথায় হবে এখন? অন্তঃসত্ত্বা নারীরা কোথায় যাবেন? সাহায্য বন্ধ হলে ওষুধ কোথায় পাবো?'

গেলো ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় গাজায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ'র ১৩ হাজার কর্মীর মধ্যে প্রায় ২০০ জন সম্পৃক্ত ছিল বলে সম্প্রতি একাধিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর দাতা দেশগুলো সংস্থাটিতে অনুদান দেয়া স্থগিত করতে শুরু করে।

সবশেষ জাপান ও অস্ট্রিয়া ইউএনআরডব্লিউএ'র অনুদান স্থগিত করেছে। এরআগে একই পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালিসহ কমপক্ষে আটটি দেশ। সবচেয়ে বড় দাতা দেশ হিসেবে ২০২২ সালেও ইউএনআরডব্লিউএতে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার অনুদান ছিল। তালিকার শীর্ষ ছয়ে থাকা জাপানসহ যুক্তরাজ্য ও  ইতালি আর্থিক সাহায্য দেয়া বন্ধ করেছে।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের ব্যবস্থা নেওয়ার উপর অনুদানের পরবর্তী কিস্তি নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হামাসের হামলার জবাবে ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনে ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বলি হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত সাড়ে ৬৫ হাজার। বিমান হামলায় বাস্তুচ্যুত উপত্যকার ২৩ লাখের মধ্যে ১৭ লাখ বাসিন্দার বেশিরভাগ ইউএনআরডব্লিউএ'র বিভিন্ন অস্থায়ী শরণার্থী কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। তবে অনুদানের অভাবে সংস্থাটির অচলাবস্থা নিরসনে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফানে দুজাররিচ বলেন, 'ইউএনআরডব্লিউএ'র কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছে জাতিসংঘ। সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে, তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে আগেই। তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রত্যেক কর্মীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে এবং ফৌজতারি মামলায় বিচার করা হবে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন সত্য দাবি করে ৭ অক্টোবরের হামলায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইউএনআরডব্লিউএ'র ১৩ কর্মী অংশ নিয়েছিল বলে সোমবার এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

যদিও দাবির পক্ষে উল্লেখযোগ্য তথ্যপ্রমাণ নেই। অভিযোগ সত্য হলেও গাজার যুদ্ধকবলিত সাধারণ বাসিন্দাদের শাস্তি প্রাপ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।