নড়াইলের জেলা শহর থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দূরে নিভৃত পল্লীতে ৬২ একর জমির উপর গড়ে উঠা এই রিসোর্টটি যেন পাখিদের এক আপন রাজ্য। সারাবছর এখানে পাখির দেখা মিললেও শীতের হাওয়া বইতেই ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখিরা ছুটে আসছে অরুণিমায়।
দিন যত যাচ্ছে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাখির সংখ্যা। পুরো এলাকাজুড়ে চোখে পড়ে বক, হাঁসপাখি, পানকৌড়ি, পেরিহাঁস, জলপিপি, শালিক, টিয়া, দোয়েল, ময়না, মাছরাঙাসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। কার্তিকের সকালে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়া নানান প্রজাতির অতিথি পাখিরা সন্ধ্যায় ফিরতে শুরু করে রিসোর্টে। লেকের ছোট-বড় গাছে পাখিদের বসার নয়নাভিরাম দৃশ্য, ডানা ঝাপটানি ও কিচিরমিচির শব্দের টানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। অনেকেই মুঠোফোনে বন্দি করছে প্রাকৃতিক এসব দৃশ্য।
ইকোপার্কের ম্যানেজার মুনিব খন্দকার বলেন, পাখি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করায় ১০ বছর আগে থেকে এলাকাটি পাখি গ্রাম নামে পরিচিতি পেয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যটক আসায় কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে কয়েকশ' বেকার যুবকের।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃতি ভিত্তিক একটি রিসোর্টটি হলো আমাদের অরুণিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব। যেখানে বছরের প্রায় নয় মাসের মতো পাখি থাকে। যারা এখানে আসবেন তারা প্রকৃতি ও পাখিসহ আমাদের সব সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।’
বিভিন্ন এলাকায় যেসব প্রাকৃতিক জলাশয় আছে সেগুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে পাখিদের আবাসভূমি করা উচিত বলছেন এই অধ্যাপক। এছাড়া অতিথি পাখির শিকার বন্ধে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ তার।
নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কেয়া রেনু রায় বলেন, ‘আমাদের দেশের পাখিকে সংরক্ষণ করার জন্য আইন আছে। তবে যতদিন মানুষ সচেতন না হবে ততদিন শুধু আইন বা বল প্রয়োগ করে পাখি সংরক্ষণ করা সম্ভব না।’
কয়েক বছর আগে শীত মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকার খালে, বিলে ও জলাশয়ে অতিথি পাখির বিচরণ থাকলেও কালের বিবর্তনে তা কমেছে। তবে নড়াইলের এই ইকোপার্কে প্রতিবছর পাখির সংখ্যা বাড়ছে বলছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ।