শ্রীলঙ্কার কাছে ধরাশায়ী আফগানিস্তান; কপাল খুলেছে বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান
শ্রীলঙ্কা বনাম আফগানিস্তান | ছবি: সংগৃহীত
0

নাটকীয়তা আর জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে টান টান উত্তেজনার ম্যাচে আফগানিস্তানকে ছয় উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। আর তাতেই কপাল খুলে গেছে বাংলাদেশের। আফগানিস্তানকে পয়েন্ট ব্যবধানে পেছনে ফেলে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠেছে গেছে লিটন দাসের দল। আর টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় ঘটেছে আফগানদের।

ডেথ গ্রুপের ড্রামাটিক ম্যাচ। মাঠের লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান প্রতিপক্ষ হলেও লড়াইটা ত্রিমুখী। পরতে পরতে উত্তেজনা-রোমাঞ্চ আর নাটকীয়তায় শেষে লড়াকু আফগানদের বিদায় নিশ্চিত আর শ্রীলঙ্কার জয়ে সুপার ফোরে ওঠার পুলসিরাত পর হলো বাংলাদেশও। ত্রিমুখী সমীকরণের ম্যাচে উড়ন্ত সূচনা আফগানদের। তবে অঙ্ক মেলেনি শেষ বেলায়। পুরনো তিক্ততা আর রাইভালরি ভুলে শ্রীলঙ্কার জয়ে স্বস্তিতে বিজয়ের হাসি হেসেছে টাইগাররাও।

হারলেই বাদ, এমন সমীকরণের ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওভারেই ২৬ রান তোলে উড়ন্ত সূচনার আভাস দেয় আফগান ওপেনাররা। তবে বাধ সাধেন লঙ্কান বোলার নুয়ান থুসারা। ৮ বলে ১৪ রান করা রহমানু্ল্লাহ গুরবাজ আউট হন কুশাল পেরেরার ফ্লাইং ক্যাচে। গুরবাজকে ফেরানোর পর ব্যাক টু ব্যাক ওভারে করিম জানাত ও সেদিকুল্লাহ আতালকে প্যাভিলিয়নে ফেরান থুসারা। ফলে ৪০ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানরা।

ইব্রাহিম জাদরান ও রাসুলি বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে দুজনের ২৪ রানের জুটি ভেঙে আফগানদের বিপদ বাড়ান দুশমন্থ চামিরা। ততক্ষণে অল্প রানেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা আফগান শিবিরে। আর আশার আলো মাঠের বাইরের প্রতিপক্ষ টাইগার শিবিরে।

কিন্তু লড়াকু আফগানরা যে সহজে হার মানতে নারাজ। আনঅর্থোডক্স শটে রাশিদ খানের পাল্টা আক্রমণ আর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীর ব্যাটে খেপাটে ঝড়। নবীর আফগান ঝড়ে দুনিথ ওয়েল্লালাগের ইনিংসের শেষ ওভারেই পাঁচ ছক্কা। মাঝপথে ধুঁকতে থাকা আফগানিস্তানের স্কোরবোর্ডে ম্যামোথ টোটাল আর আড়ালে চিন্তার ভাঁজ টাইগার সমর্থকদের।

আরও পড়ুন:

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচ উইনিং স্টার্ট পায় শ্রীলঙ্কা। তবে পাথুম নিশাঙ্কাকে আউট করে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আজমতউল্লাহ ওমরাজাই। ২২ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ৪৭ রানে কামিল মিশারাকে ফেরান মোহাম্মদ নবী। কুশাল মেন্ডিস ও পেরেরার ৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কক্ষপথেই ছিলো সনাৎ জয়সুরিয়ার শিষ্যরা। তবে বিপদ বাড়ানোর আগেই মুজিবের বলে প্যাভিলিয়নে পথ ধরেন পেরেরা। ব্যাট হাতে দলকে আস্থা দিতে পারেননি অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কাও। লঙ্কান ক্যাপ্টেনের প্যাভিলিয়নে ফেরার পথে যেন আনমনে লিটন দাসদের ফিরতি ফ্লাইট ধরার চিত্রটাও ফুটে উঠছিলো টাইগার ক্রিকেটপ্রেমীদের।

তবে দুই মেন্ডিসের ব্যাটে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট আরও একবার উপহার দিয়েছে অভাবনীয় এক নাটকীয়তার। যার মঞ্চায়নের শেষ দৃশ্যে কুশাল মেন্ডিস নায়ক বনে হয়েছেন। তার অপরাজিত ৭৪ রান পেয়েছে ম্যাচ জয়ী ইনিংসের খেতাব। আর ৬০ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেও ট্যাজিক হিরো মোহাম্মদ নবী।

আর লঙ্কানদের জয়ের উৎসবে সামিল হয়েছে মাঠের বাইরে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে থাকা টাইগার ক্রিকেটপ্রেমীরাও। তবে একটা প্রশ্ন অবশ্য থেকেই যায় সাম্প্রতিক অতীতে ক্রিকেটীয় রাইভাল হয়ে ওঠা শত্রুর এমন জয়ে কি নাগিন ডান্স কিংবা টাইমড আউটের তিক্ত ঘটনার ইতি ঘটবে নাকি সামনে অপেক্ষা করছে নতুন কোন নাটকীয়তা।

এসএস