ক্রিকেট
এখন মাঠে

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে নতুন বিতর্ক

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কোন সংস্করণে আয়োজন হবে এ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিজ্ঞাপন আর আয়ের খাত বিবেচনায় প্রচলিত ওয়ানডে ফরম্যাটকেই উপযুক্ত মনে করছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে টি-টোয়েন্টির তুলনায় ওয়ানডে ক্রিকেটের দর্শক কয়েকগুণ কমেছে বলে জানিয়েছেন সম্প্রচারকারীরা।

ধুমধাড়াক্কা টি-টোয়েন্টির প্রচলনের পর থেকে ক্রিকেটের অন্যান্য সংস্করণের আবেদন যে কমছে, এটি মোটামুটি সবাই স্বীকার করবেন। তবে সে হারটা কেমন, সেটি কি জানেন? আইসিসির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডেতে দর্শকের অংশগ্রহণ এবং মোট ভিউয়ারশিপ ২০ শতাংশের বেশি কমেছে!

এ অবস্থায় পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কোন ফরম্যাটে আয়োজন করা উচিত, ওয়ানডে নাকি টি-টোয়েন্টিতে? এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আইসিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্টেকহোল্ডার ও ব্রডকাস্টারদের নানাবিধ কথার চালাচালি চলছে। গেল মাসে দুবাই হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত বৈঠকে সব পক্ষের মতামত শুনেছে আইসিসি।

ক্রিকেটে যারা অর্থ বিনিয়োগ করেন বিশেষ করে ব্রডকাস্টাররা, তাদের জন্য ওয়ানডে ফরম্যাটই বেশি লাভজনক। কারণ, ২০ ওভারের তুলনায় ৫০ ওভারের ম্যাচে বিজ্ঞাপনের স্লট বেশি পাওয়া যায়। তবে প্রতি ম্যাচের সবগুলো স্লট বিক্রি করা নিয়ে সংশয় থাকে।

এবার বিজ্ঞাপনের দরটা একটু দেখে নেয়া যাক। চলমান আইপিএলে প্রতি ১০ সেকেন্ড বিজ্ঞাপন স্পটের জন্য ব্রডকাস্টাররা আয় করেন ১৫ লাখ রুপি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অংকটা এতো চড়া না হলেও ওয়ানডের তুলনায় বেশি। যেমন, টি-টোয়েন্টিতে প্রতি ১০০ টাকা আয়ের বিপরীতে ওয়ানডেতে আয় করা যায় গড়ে ৫৭ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। তবে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে প্রতি ম্যাচে যেখানে ১০০টি বিজ্ঞাপন স্লট পাওয়া যায়, সেখানে ৫০ ওভারের ম্যাচে পাওয়া যায় ১৬০টি স্লট। সে অনুযায়ী সবগুলো স্লট বিক্রি করা গেলে ওয়ানডেতেই সম্প্রচার স্বত্ব কেনা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বেশি আয়ের সুযোগ থাকে।

তাহলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আয়োজনের আলোচনা কেন আসছে? কারণ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক দেশ পাকিস্তানে খেলতে যেতে চায় না ভারত। ফলে এশিয়া কাপের মতো এবারও ভাবা হচ্ছে হাইব্রিড মডেলের কথা; যেখানে ভারতের ম্যাচগুলো খেলা হতে পারে দুবাইয়ে।

আইসিসির ব্যস্ত সূচির কারণে ১৭ থেকে ১৮ দিন পাওয়া যাবে টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য। ফলে হাইব্রিড মডেলে আসর আয়োজন করলে তিনদিনে ২টি ম্যাচ খেলতে হতে পারে অংশ নেয়া ৮টি দলকে। এর মধ্যেই পাকিস্তান-দুবাই ভ্রমণও করতে হবে তাদেরকে। ক্রিকেটারদের ভ্রমণ ক্লান্তি আর টানা ম্যাচের কথা বিবেচনায় রেখে অনেকে বলছেন, আসরটিকে টি-টোয়েন্টিতে রূপান্তরিত করতে।

এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কখনোই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হয়নি। এমনকি ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যস্ত সূচির ফাঁদে পড়ে ২০১৭ সালের পর থেকে এই আসরটি আর অনুষ্ঠিত হয়নি। ৮ বছর পর আসরটি ফেরানোর কথা ভাবলেও জটিলতার মুখে পড়েছে আইসিসি। তবে হুট করেই ওয়ানডে ফরম্যাট বদলানোর সুযোগ নেই আইসিসির সামনে। কারণ ৪ বছর চক্রের সম্প্রচার স্বত্ব কিনতে যারা ৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন, তাদের লাভের কথা বিবেচনা না করে ক্রিকেটারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করার সাহস কী আদৌ দেখাতে পারবে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি?

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর