দেশে এখন
বিশেষ প্রতিবেদন
0

চট্টগ্রামে জরিমানা, মামলা আর গাড়ি জব্দ করেও সামাল দেয়া যাচ্ছে না যানজট

এক মাসেই প্রায় দেড় কোটি টাকা জরিমানা, ৫ হাজার মামলা আর ৭ হাজার গাড়ি জব্দ করেও যানজট সামাল দেয়া যাচ্ছেনা বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি নগরে ২৫ শতাংশ সড়ক থাকার কথা থাকলেও চট্টগ্রাম নগরীতে আছে কেবল ১০ শতাংশ। তার ওপর যোগ হয়েছে অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য। ফলে দিন দিন যানজটের নগরীতে পরিণত হচ্ছে চট্টগ্রাম।

১৬০ বর্গ কিলোমিটারের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। পাহাড়, নদী, সমুদ্রবেষ্টিত এ বন্দর নগরীর সড়কের গঠন আর ব্যস্ততায় অন্য শহরের তুলনায় রয়েছে কিছুটা ভিন্নতা। আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক লরির আধিপত্য চলে এখানকার সড়কগুলোতে। যার ফলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা মুখোমুাখি হয় বাড়তি জটিলতার।

চট্টগ্রাম শহরে হাঁটছে ঢাকার পথেই। একসময়কার সবুজে ঘেরা মনোরম শহর এখন যানজটে দুর্বিষহ।

শুধু নভেম্বর মাসেই আটক হয়েছে ৭ হাজার অবৈধ যানবাহন। তবে, ট্রাফিক পুলিশ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে অবস্থা এতটাই বেগতিক যে আইন প্রয়োগ করেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছেনা। এ অবস্থায় যানজট নিরসনে নতুন মেয়রের সাথে বৈঠকে বসেন পুলিশ, বাস মালিক, চালক, বিআরটিএসহ নানা পক্ষ।

চট্টগ্রাম উত্তর জোনের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘মালিকরা যেটা করেন সারাদিন গাড়ি চালানোর পরে মাকে দুই থেকে ৩ হাজার টাকা সন্ধ্যার সময় এনে দিবি। এই দুই হাজার ৩ হাজার টাকার জন্য এরা প্রতিযোগিতায় নামে। পাশাপাশি এরা একটা যাত্রীও মিস করতে চাই না। যার ফলে তারা বাস যেভাবে সেভাবে চালায় এর ফলে যানজট তৈরি হয়।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি নগরীতে ২৫ শতাংশ সড়ক থাকা প্রয়োজন, সেখানে চট্টগ্রামে আছে মাত্র ১০ শতাংশ, নেই পর্যাপ্ত পার্কিংও। এছাড়া সড়কের গোলচত্বর সঠিক নিয়মে তৈরি হয়নি। সংকট নিরসনে কোম্পানিভিত্তিক গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর দাবি বিশেষজ্ঞদের।

সড়ক যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ‘বাসগুলো কোম্পানিভিত্তিক গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করলে কিছুটা যানজট কমিয়ে আনা সম্ভব। এখানে রাস্তা অনেক সরু তার উপর এখানে নিবন্ধন নেই এমন যান এখানে চলাচল করছে।’

এ অবস্থায় নগরীর যানজট নিরসনে প্রধান সড়কে ব্যাটারি রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এছাড়াও নগরীর সড়কের ধারের খালি জায়গায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পার্কিং চালুর কথা ভাবছে সংস্থাটি।

চসিকের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নগরীর সড়কের ধারের খালি জায়গায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পার্কিং চালু করা হবে। বিশেষ করে ফ্লাইওভারের নিচের জায়গা গুলো।’

অতিরিক্ত যানবাহন আর যানজটের কারণে চট্টগ্রাম শহরে গাড়ির গড় গতি নেমেছে মাত্র ৫ কিলোমিটারে। যা এক যুগ আগেও ছিল ২১ কিলোমিটার।

ইএ