কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
0

বরিশালে গবাদিপশুর ঘাস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন খামারিরা

বরিশালে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে উন্নত জাতের ঘাস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন খামারিরা। পাশাপাশি চাষ হচ্ছে ভুট্টারও। সাইলেজ প্রক্রিয়ায় গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এই ঘাস ও ভুট্টা। এতে যেমন কমছে গো-খাদ্যের খরচ; তেমনি মিটছে পশুর দানাদার জাতীয় খাবারের পুষ্টি চাহিদা। পশুপালনে খরচ কমলে উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

কোরবানি ঈদ ঘরে বরিশালে গরু খামারি ও ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। পশু মোটাতাজাকরণে চলছে চেষ্টা। বছরজুড়ে কেনা ভুসি, খৈল, ঘাস ও খড় গবাদিপশুর স্বাভাবিক খাবারের তালিকায় থাকলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর রুচি বাড়াতে খাওয়ানো হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত গো-খাদ্য।

খামারের আশপাশের জমিগুলোতে চাষ হচ্ছে নানান ধরনের ঘাস ও ভুট্টা। মাঠ থেকে ভুট্টা গাছ নিয়ে এসে কাটিং মেশিনের মাধ্যমে কাটা হয়। সাইলেজ প্রক্রিয়ায় এগুলো সংরক্ষণ করা হচ্ছে গরুর খাবার হিসেবে। এই প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক গো-খাদ্যের তুলনায় কমেছে খরচ।

খামারিরা বলেন, খরচ কমানোর জন্য আমরা ঘাস চাষ করতেছি। ঘাস থাকলে অনেক উপকার হয়। দানাদার খাদ্য কম লাগে। এর দাম বেশি হওয়ায় গরুকে সাইলেজ ও ঘাস খাওয়াচ্ছি।

গত ২ বছরের তুলনায় এ বছর পশুর দানাদার খাবারের দাম বাড়তি। আগে ৪০ কেজি ভুসির যে বস্তার দাম ছিল ১৩০০–১৪০০ টাকা, তা এখন বেড়ে হয়েছে ২০০০–২২০০ টাকা। খৈল আগে যেখানে বস্তা ২৭০০ টাকা দরে বিক্রি হতো, সেখানে এখন তা ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন অবস্থায় খামারিরা বেছে নিয়েছেন ঘাস ও ভুট্টা জাতীয় খাবার যা তারা নিজেরাই চাষ করছেন। এতে পূরণ হচ্ছে পশুর দানাদার খাবারের চাহিদা।

এক খামারি বলেন, 'খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এজন্য অ্যাংকর ডালের ভুসি, ছোলা বুটের খোসা ও ভুট্টার গুঁড়া এক সাথে গরুকে খাওয়াই।'

বেসরকারি এনজিও সংস্থা এসিডিআই ভোকার কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের খামারিদের প্রাকৃতিক গো-খাদ্য উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এছাড়া ডালের উচ্ছিষ্ট কীভাবে সংরক্ষণ করা যায় সে বিষয়েও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারা। উন্নত জাতের কাঁচা ঘাস, সাইলেজ, ইউরিয়া মোলাসেস জাতীয় খাবার; গরুর খাদ্য খরচ কমিয়ে আনবে ৪০-৪৫ শতাংশ। আর পশু পালনের খরচ কমলে উৎপাদন আরও বাড়বে বলে মনে করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আবু সুফিয়ান বলেন, 'বরিশাল অঞ্চলে গরুর ঘাস চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে আমরা চেষ্টা করছি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ঘাস চাষে একটি প্রকল্প রয়েছে।'

উন্নত জাতের ঘাস সারা বছরই গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা গেলে কমবে খামারির খরচ। আরও বেশি মানুষ উদ্বুদ্ধ হবে খামার ব্যবসায় এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।