বিস্তীর্ণ চারণ ভূমি থাকায় গবাদিপশু পালনে এগিয়ে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা। প্রতিটি বাড়িতেই হয় গরু পালন। দুই দশক আগে থেকেই সাতক্ষীরা সদর, তালা, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার দুগ্ধ খামার।
এসব খামারে দেশি জাতের গরুর পাশাপাশি ফ্রিজিয়ান, জার্সি ও হাইয়াল জাতের গাভি লালন পালন করা হয়। এসব খামারে উৎপাদিত তরল দুধের চাহিদা মিটছে সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের।
জেলার সদর উপজেলার ধুলিহর এলাকার খামারি ফারুক মোল্লা। ২০ বছর আগে মাত্র ২টি গরু নিয়ে খামার শুরু করলেও এখন তার এই খামারের গরু আছে ৫৫টি। যা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০০লিটার দুধ পাচ্ছেন তিনি। তবে গো-খাদ্যর দাম বাড়ায় খামার নিয়ে সংকটে পড়েছেন তিনি।
খৈল, ভুসি ও বিচলিসহ গো-খাদ্যের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় তার মত জেলার অন্য খামারিরাও খামারের গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছে। তাছাড়া অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতাসহ নানা কারণে গো-খাদ্যর সংকট দেখা দিয়েছে।
খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কিন্তু খামার থেকে বিক্রি হয় ৪২ টাকায়। মিল্কভিটাসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির চিলিং সেন্টারে দুধের দাম দেয় ৪৫-৪৮ টাকা। তবে গো-খাদ্যের দামের তুলনায় দুধের দাম নিয়ে সন্তুষ্ট নন প্রান্তিক খামারিরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, বর্তমানে জেলায় দৈনিক প্রায় ১ লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা ১৪ হাজার লিটার। বাকি দুধ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। তবে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় অনেকে নতুন খামার করতে আগ্রহ হারাচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখানে রেজিস্ট্রেশনকৃত খামারের সংখ্যা প্রায় ৫৭৫টি এবং রেজিস্ট্রেশন ছাড়া খামারের সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজার। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরিচালনায় বিভিন্ন খামার এবং গ্রাম পর্যায়ে ভ্যাকসিনেশন, কৃমির ওষুধ সরবরাহসহ বিভিন্ন টেকনিক্যাল সহায়তা দেয়া হয়ে থাকে।’
সাতক্ষীরায় অন্তত তিন হাজারের বেশি খামার রয়েছে। এরমধ্যে সরকারের নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা আড়াই হাজার। আর জেলার ডেইরি শিল্পে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার মানুষের।