চট্টগ্রাম কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রফেসর ছোলজার রহমান বলেন, 'বন্যার কারণে ব্যাপক ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে খাদ্যের নিরাপত্তা ও সরবরাহ বিঘ্নিত হয়।'
বৈচিত্র্যময় কৃষির জনপদ যশোর। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখানে মৌসুমে ফসলহানি ১০ থেকে ১৫ ভাগ। নানা কারণে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের লোকসানের অংকটাও অনেক বড়। শুধু এই জেলাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে মধ্যে উপকূলীয় জেলাগুলোতে। তাই এসব এলাকায় উৎপাদন নিশ্চয়তাকেও প্রতিনিয়ত চোখ রাঙায় দুর্যোগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, 'লবনাক্ত জাত, খরা ও ঠান্ডা সহনশীল জাতসহ অন্যান্য জাতের জন্য প্রযুক্তি আছে। মাঠ পর্যায়ে এগুলো সম্প্রসারণের জন্য আমরা সচেষ্ট আছি।'
গবেষকরা জানান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বকৃষিতেই প্রভাব পড়ছে। তাই মৌসুম বুঝে, সঠিক জাত নির্বাচন করে এবং প্রয়োজনে চাষাবাদ পদ্ধতি পরিবর্তন করার পরামর্শ তাদের।
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীপঙ্কর দাশ বলেন, 'লক্ষ্য পূরণ না হলে বেশি পরিমাণে বিদেশ থেকে আমদানি করত হবে। তখন আমদানি খরচ বেড়ে যাবে আর রিজার্ভের উপরেও টান পড়বে।'
আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.কাওছার উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, 'কৃষকদের সার্বিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তাদেরকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান কিংবা উপকরণ দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করছি।'
কৃষক নেতারা মনে করেন সবাইকে ভর্তুকি-প্রণোদনা কিংবা ক্ষতিপূরণের আওতায় আনা সম্ভব হয় না। সরকারি সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে শস্য বীমা চালু করারও পরামর্শ তাদের।
কৃষকরা জানান, ব্যাপক খরচ করলেও তা টিকিয়ে রাখা যায়নি। বৃষ্টি হলে কাটা ধান নষ্ট হয়ে যায়। সকল চাষেই বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়।
যশোর কৃষক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান হিরু বলেন, 'থাযথভাবে কৃষিক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান করতে হবে এবং দলীয় আনুগত্য না রেখে কৃষকরাই যেন অনুদানটা পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।'
খাদ্য নিরাপত্তার হুমকি মোকাবিলায় উৎপাদনের দিকে গুরুত্বের পাশাপাশি ফসল সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনাতেও নজর দেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। পচনশীল শস্য মজুতকালের ত্রুটিতেও ক্ষতি হয় ফসল ও কৃষকের।