জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি বছর শেরপুরের পাঁচ উপজেলায় পাঁচ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে ৭০ শতাংশ আলু বীজ রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় আলু চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
নারী শ্রমিক হেলেনা বেগম (৩৫) বলেন, 'আমরা সারাদিন বাড়িতেই সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকি। অনেক সময় হাতে কাজ না থাকায় অলস সময় পার করি। কিন্তু আলু বীজ রোপণ ও আলু তোলার সময় আমাদের প্রয়োজন হয়। তখন প্রতিদিন কাজ করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা মজুরি পাই। কাজ করে যে টাকা পাই সেটা দিয়ে সংসারের বিভিন্ন কাজে খরচ করি।
শ্রমিক আবু মিয়া (৪০) বলেন, 'বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে আমি আলু বীজ রোপণের কাজ করি। এজন্য দূরে কোথাও কাজের জন্য যেতে হয় না। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে হাতে কোন থাকে না। তখন বাড়ির পাশেই আলু বীজ রোপণের কাজ করে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা আয় করতে পারি।'
আলু চাষি ইসমাঈল হোসেন (৩৪) বলেন, 'এ বছর আমি ১০ একর জমিতে আলু চাষ করছি। অন্যান্য ফসল চাষের পাশাপাশি আলু চাষ লাভ বেশি। এক একর জমিতে আলু বীজ ক্রয়, রোপন, সার প্রয়োগ, সেচ ও শ্রমিকসহ খরচ হয় এক লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। এরপর খরচ বাদ দিয়ে একর প্রতি লাভ থাকে ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা।'
কৃষক সাদেক মিয়া (৩৮) জানান, প্রতিবছর তিনি আমন ধান কাটার পর আলু বীজ রোপণ করেন। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবার তিনি ডায়মন্ড, এস্টারিক্স ও সানশাইন এই তিন জাতের আলু বীজ রোপণ করেছেন।
তিনি বলেন, 'আলু গাছের সবথেকে খারাপ রোগ লেট ব্লাইট বা আলুর মড়ক রোগ। এই ভাইরাস আলু খেতে প্রবেশ করলে একদিনের ব্যবধানে সব গাছ মরে পুড়ে যাওয়ার মত অবস্থা হয়। তবে যদি শৈত্য প্রবাহ কম থাকে বা জমিতে মড়ক রোগের আক্রমণ না হয়। তবে আলুতে ভাল লাভ করতে পারব।'
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) শেরপুর জেলার উপপরিচালক মো.খলিলুর রহমান বলেন, 'চলতি বছর জেলায় আলুর উন্নত মানের আলু বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষকেরা এবার লেডি রোসেটা, সানশাইন, এস্টারিক্স, ডায়মন্ড, কারেজ এই চার জাতের আলু বীজ রোপণ করছেন। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শেরপুর জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হবে।'