রঙবেরঙের ফুলের রাজ্যে যশোরের গদখালি। এখানকার ফুলের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য অনাবিল প্রশান্তি আনে সবার মনে।
বছরজুড়ে ফুলের চাষ হলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মূল মৌসুম। এই পাঁচ মাসে বিজয় দিবস, ইংরেজি নববর্ষ, বিশ্ব ভালোবাসা-বসন্ত, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস ঘিরে চলে ফুলের চাষ।
বিশেষ দিবসের প্রায় ৭০ শতাংশ ফুলের জোগান হয় গদখালি থেকে। তাই সেই চাহিদা মেটাতেই এখন সব তোড়জোড়। সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা- সবসময়ই মাঠে কৃষকের পরিচর্যা। সব থেকে বেশি চাষ হচ্ছে গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনিগন্ধা আর গাঁদা ফুলের।
চাষিদের একজন বলেন, ‘এখানে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে করা হয়।’
আরেকজন বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি এই দুই মাস ফুলের দাম বেশি থাকে।’
গদখালির ফুল চাষি মন্জুরুল আলম। আগে গোলাপ, রজনিগন্ধা ফুল চাষ করলেও গত ৩ বছর ধরে করছেন জারবেরা ফুলের চাষ। বলেন, এই মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে জারবেরা ফুল চাষে খরচ হয়েছে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। আবহাওয়া ও ফুলের বাজার ভাল থাকলে এখান থেকে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার বাণিজ্য সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।
ফুলচাষি মন্জুরুল আলম বলেন, ‘আবহাওয়া এমন থাকলে আর যে দাম আছে এখন সেটা থাকলে আমরা লাভবান হবো।’
ফুল ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, জাতীয় কয়েকটি দিবস সামনে রেখে চলতি বছর ৫শ কোটি টাকা বাণিজ্য হবে শুধু মাত্র গদখালী থেকে।
এছাড়া বছর বৃষ্টিতে চাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভাল দাম পেলে তা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলেও জানান তারা।
গদখালি ফুলচাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, ‘ফুল নষ্ট হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কিনা। যদি বাজার ভালো থাকে তাহলে চাষিরা লাভবান হবে।’
কৃষি বিভাগ বলছে, ফুল থেকে সুগন্ধি বা সুগন্ধি তেল উৎপাদন করার বিষয়ে চাষিদের প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া চাষিদের উৎপাদিত ফুল পরিবহন ও সংরক্ষণে যাতে বেগ পেতে না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার কথা বলছ কৃষি কর্মকর্তা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক প্রতাপ মন্ডল বলেন, ‘আরো বেশি পরিমাণ জমিতে কীভাবে ফুল আবাদ করতে তার পরামর্শ দিচ্ছি চাষিদের।’
এ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ১১ ধরনের ফুলের চাষ হয়- ৬শ' ৪১ হেক্টর জমিতে।