সংবিধান সংস্কারসহ বিভিন্ন কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেবার পর তা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা হয়েছে অনেক। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, এসব প্রস্তাবের কতটুকু চূড়ান্ত হবে, তা ঠিক হবে রাজনৈতিক দলসহ পক্ষগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।
কিন্তু যখন রাজনীতির মাঠে সংস্কার, নির্বাচন নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক প্রধান শক্তিগুলোর মধ্যে, তখন সংস্কার কমিশনের ব্রিফিংয়ে জানতে চাই এই সংস্কার প্রস্তাবের ভবিষ্যতও তত্ত্বাবধায়ক কিংবা তারও আগে ৯০ এর সংস্কার প্রস্তাবের মত হবে কি?
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে কী এমন কোনো ঘটনা আছে যেখানে ১ হাজার ৪০০ মানুষ মারা গিয়েছে দুই সপ্তাহের মধ্যে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই রকম কোন ঘটনা আছে যেখানে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গায় বসে শাসক মানবাধিকারের সকল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এইটা আমি বলছি না জাতিসংঘের রির্পোট বলছে।’
এখানে প্রশ্ন করা হয়, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি যে আস্থাহীনতা সেই প্রেক্ষিতে এই সরকারের আমলেই গণভোট করে সংবিধান সংশোধন সম্ভব কি না?
তিনি বলেন, ‘গণভোট করতে পারবে কিনা তা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একটা কমিশন তৈরি করা হয়েছে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে। আশা করছি একটা পথ বের হবে।’
প্রায় একমাস আগে প্রকাশিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা, সংসদ সদস্য হবার ন্যূনতম বয়স, নারীর কোটা আসন, বহুত্ববাদ ও রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। জানতে চাওয়া হয়, আসলেই কি এসব প্রস্তাব একেকজন প্রধানমন্ত্রীকে স্বৈরাচারী হবার পথকে রুদ্ধ করতে পারবে?
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিভিন্ন রকম আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণরা। এখন যে তরণরা রাজপথে প্রাণ দিতে পারবে আইন তৈরির ক্ষেত্রে তাদের অংশীদারিত্বের ব্যবস্থা কীভাবে করবেন। তাদেরকে সংসদেই আসতে দিতে চাচ্ছেন না।’
প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে লিখিত বক্তব্য পড়েন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান। তিনি জানান, মহান স্বাধীনতার যুদ্ধের সঙ্গে ২৪ এর গণআন্দোলন, সংসদীয় পদ্ধতিতে ক্ষমতার ভারসাম্য, প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা হ্রাস, অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ, শক্তিশালী স্থানীয় সরকার কাঠামো এবং মৌলিক অধিকারের আওতা বাড়ানো এই ৭টি বিষয়কে মাথায় রেখেই সুপারিশ প্রস্তাব করেছে সংস্কার কমিশন।