এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল 'হাইড্রো ডিপ্লোমেসি এবং ওশান ফিউচার'। সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব থাকা আন্তর্জাতিক নদীগুলোর ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করার বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা হয়।
এসময় জয়ন্ত বসু বলেন, 'নদীর পানি বণ্টনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে আলোচনা জরুরি। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এসব বিষয়ে রাজনৈতিক প্রভাব যুক্ত হয়ে সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।'
তিনি তিস্তায় আন্তঃসীমান্ত সংলাপ ও 'ট্রান্স বাউন্ডারি ডিসকোর্স' প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান।
জয়ন্ত বসু বলেন, 'নদী সংকট মূলত মানুষের তৈরি। নদীগুলোকে নর্দমায় পরিণত করা হচ্ছে, যা শুধু কলকাতা নয়, ঢাকা, করাচি, কলম্বোসহ বিভিন্ন শহরে ঘটছে। এ প্রবণতা এখনই বন্ধ করা উচিত।'
সিকিমে বাঁধের ফলে তিস্তার পানিপ্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সঠিক তথ্য বিনিময় এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন না থাকায় যৌথ নদী কমিশন কার্যকরভাবে কাজ করতে পারছে না।'
দু'দিনব্যাপী সম্মেলনে 'তিস্তা ও সীমান্তবর্তী নদীসমূহের ভবিষ্যৎ', 'জলবায়ু পরিবর্তন ও স্থানীয় উদ্ভাবন' এবং 'পানি অর্থায়ন ও পানি কূটনীতির ভূমিকা' নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় আন্তর্জাতিক নদীগুলোর নাব্যতা ও প্রবাহ নিশ্চিত করতে ভারত, চীন ও নেপালের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের তাগিদ দেয়া হয়।
সম্মেলনে টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল পানির ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ, ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ এবং পানি পরিশোধন ব্যবস্থায় বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়।
পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা, পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ, এবং নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেয়া হয়। বক্তারা স্কুল পর্যায় থেকে স্বাস্থ্যশিক্ষা উন্নত করা এবং পানির ব্যবহার সম্পর্কিত সচেতনতা তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
একশনএইড বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এই পানি সম্মেলনে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে পানি জাদুঘর জনপ্রিয়করণ এবং আরও বেশি জনসম্পৃক্ততার আহ্বান জানানো হয়।