রাজশাহীর নরম বেলে-দোআঁশ মাটিতে সহজেই হলুদের চাষ করা যায়। ফলে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে হলুদের উৎপাদনে। যা গতবছরের তুলনায় বেশি প্রায় ৬২৮ মেট্রিক টন।
রাজশাহীর আড়ানি গ্রামের কৃষ্ণারাণী দাস স্বল্প পুঁজিতেই করেছেন হলুদের চাষ। এমনকি বছর না ঘুরতেই চৈত্র-বৈশাখের রোপা হলুদ তুলতে পারছেন ঘরে।
কৃষাণি কৃষ্ণারাণী দাস বলেন, ‘জমিতে শুধু হলুদ লাগিয়ে রাখলেই হবে না, সার, ফসফেটসহ অন্যান্য ওষুধ সময়মত দিতে হবে।’
রং ,স্বাদ আর সুঘ্রাণে রাজশাহীর হলুদের চাহিদা বাড়ছে বহুজাতিক কোম্পানির কাছে। এমনকি হাটে মান ও প্রকারভেদে প্রতিমন কাঁচা হলুদ ১৪'শ টাকায় ও শুকনো হলুদ বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার টাকায়।
হাটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আরানি হলুদের দাম সবচেয়ে বেশি, এটা ২২৫ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।’
ভালো উৎপাদন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় ধীরে ধীরে হলুদের ব্যবসা শিল্পে রূপ পাচ্ছে রাজশাহীর আড়ানীতে। হলুদ প্রক্রিয়াজাত করতে গড়ে উঠছে শতশত হলুদের চাতাল। ফলে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের।
চাতালের শ্রমিকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘দিন ৪০০ টাকা করে কাজ করি। সকালে আসি, সন্ধ্যায় চলে যাই।’
চাতালের মালিক বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই এই ব্যবসা চলছে, তবে এখন আরো অনেকেই শুরু করেছে।।’
বহুজাতিক কোম্পানির তদারকি ও কৃষিপ্রযুক্তির মানোন্নয়ন হলে রাজশাহী থেকে আগামীতে আরো বেশি হলুদের উৎপাদন সম্ভব। এতে রাজশাহী অঞ্চলে হলুদের অর্থনীতি আরো বড়ো হবে বলে জানান, বিশেষজ্ঞরা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিগুলো হলুদ ক্রয় করছে এবং সেটা প্যাকেট জাত করে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।’
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর রাজশাহীতে উৎপাদিত কাঁচা হলুদ ২৬ কোটি টাকার ও শুকনো হলুদ বিক্রি হবে ১৬৭ কোটি টাকার।