সচিবালয়ে আজ (মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সাথে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আলাপকালে এসব কথা উঠে আসে।
সরকারি চাকরির বিধি অনুযায়ী জনগণের স্বার্থে কাজ করার কথা সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের। গত ১৫ বছরে তো বটেই সব সরকারের আমলেই সরকারি চাকরিজীবীদের অনেকেই জনগণের সেবকের বদলে আচরণ করেছেন অনেকটা প্রভুর মতো। যেখানে জনসাধারণের স্বার্থ ছিল উপেক্ষিত।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ- টাকা না দিলে কাজে থাকে না গতি। আর বদলি-পদোন্নতিতে মোটা অংকের টাকা লেনদেনের অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। পাতানো তিনটি জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে গুম, খুন ও টাকা পাচারে আওয়ামী লীগ সরকারও সহযোগী হিসেবে পাশে পেয়েছে অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত এই খাতকে।
এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই জনপ্রশাসন ঢেলে সাজাতে সংস্কার কমিশন গঠন করে। সাংবাদিকদের সাথে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মতামতকালে সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে দলীয় হস্তক্ষেপের বিষয় উঠে আসে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, 'কোনো দেশেই ডেমোক্রেসি সরকারকে পরিবর্তন করতে পারে না। সরকারকে গাইড কর পারে না। কাজেই এটা বলে তো লাভ নেই। ৬৫ শতাংশ বিসিএস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে রিজার্ভ থাকে। ৩৫ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডার থেকে নেয়া হয়। আমরা এটা ৫০/৫০ করার জন্য সুপারিশ করেছি।'
সরকারি কর্মকর্তাদের সম্বোধন করা নিয়েও নানা সময়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংস্কার কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিলো ৫ আগস্টের পর স্যার-আপু বলার বাধ্যবাধকতা নেই।
জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান বলেন, 'সার্ভেন্ট মানে কী? বলে যে সেবক। আমি বললাম আসল মানেটা বলেন, তখন বলে চাকর। তখন আমি তাদের বলছি যে প্রতিদিন একবার মনে করবেন যে, আয়না একটা লাগাবেন তার সামনে গিয়ে বলবেন আমি চাকর আমি চাকর। তাহলে কাজ হবে।'
সরকারি চাকরিজীবীদের জনগণের আরও বেশি সেবক হয়ে ওঠার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন কমিশনের ছাত্র প্রতিনিধি।
এছাড়া জনপ্রশাসন বিষয়ক যৌক্তিক তথ্য সাংবাদিকদের দেয়ার ব্যাপারেও সুপারিশ থাকবে বলে আশ্বাস দেয় সংস্কার কমিটি।