কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার যদুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন বিক্রির নিলামে প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ১৬ হাজার ২৫৭ টাকা। একই উপজেলার শংকুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনসেডসহ দুটি ভবন নিলামের জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২১ হাজার ৩০১ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, এ দুইটি বিদ্যালয়ের তিনটি ভবন ৪১ হাজার ২০০ টাকায় নিলামে বাগিয়ে নিয়েছেন বুড়িচং উপজেলার যুবদলের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন।
শুধু এ দুটি বিদ্যালয়ের স্থাপনাই নয়, বিজ্ঞপ্তির ১০টি বিদ্যালয়ের নিলামই প্রভাব বিস্তার করে ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে এই নেতার বিরুদ্ধে। এতে রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হয়েছে বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধানরা।
কুমিল্লা বুড়িচংয়ের যদুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কামরুন্নাহার নীরা বলেন, 'শুধু আমাদের স্কুল না। আরও দশটা স্কুলের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিলামে তোলা হয়েছে। আর নিলামের ডাকে এটা ১৭ হাজার ৫০০ তে বিক্রি করা হয়েছে।'
নামমাত্র মূল্যে কীভাবে প্রকৌশল বিভাগ প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। উপস্থিত থেকেও প্রভাব বিস্তারের কারণে নিলামে অংশ নিতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে।
ভবন ভাঙার খরচ বাদ দিয়ে প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ সঠিক ছিল বলে দাবি এলজিইডি'র। আর যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিলামের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতাকেই নিলাম দেয়া হয়েছে, বলছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। অনিয়ম হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও আশ্বাস দেন শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা।
কুমিল্লার বুড়িচং এলজিইডি উপজেলার প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ অক্ষর বলেন, 'এটার যে নিট দাম ওইটাই করা হয়েছে। অনেকের মনে হতে পারে কম হতে পারে। কিন্তু কম না।'
বুড়িচং সহকারী উপজেলার শিক্ষা অফিসার মো. আবু মোতালেব বলেন, 'ইঞ্জিনিয়ার অফিস একটা প্রাক্কলন দিবেন। এই প্রাক্কালনে যে সর্বোচ্চ দাম দিবে সেই পাবে।'
এদিকে উন্মুক্ত নিলামে নিয়ম মেনেই কাজগুলো পেয়েছেন বলে দাবি অভিযুক্ত যুবদল নেতা দেলোয়ার হোসেনের। তিনি বলেন, 'আমাকে জনমনে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এবং আমার ইমেজ নষ্ট করার জন্য সুকৌশলে তারা এই কাজ গুলো করছে।'
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি দেলোয়ার হোসেনকে শোকজ করেছে বলে জানান দলের আরেক সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন শিবলু। বলেন, 'যুবদলের কেউ যদি কোনো অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।'
গেল ১৬ অক্টোবর বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই নিলাম সম্পন্ন হয়। নামমাত্র প্রাক্কলন মূল্য এবং একই ব্যক্তি সকল নিলাম পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।