দেশে এখন
0

বানভাসিদের দুর্ভোগ চরমে, মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন লাখো মানুষ

দফায় দফায় ভারি বর্ষণ ও উজানের অব্যাহত ঢলে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরমে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকটে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। তবে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ফেনীতে। এতে বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বন্যার্তরা।

দিন দিন নোয়াখালীতে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। রাতের ব্যবধানে জেলার অধিকাংশ এলাকায় পানি বেড়েছে এক থেকে দেড় ফুট। জেলার ৮টি উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্গতদের ভিড়। পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে ইতোমধ্যেই দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। জেলাটিতে এ পর্যন্ত বন্যায় ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেছে ১০ জনের। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রায় সব কটি ইউনিয়নই এখন প্লাবিত। ভালো নেই, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর, রামগঞ্জও।

সবমিলিয়ে প্রায় জেলার ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি। বন্যা কবলিতরা ত্রাণের আশায় থাকলেও দুর্যোগের কারণে ব্যাহত হচ্ছে ত্রাণ সরবরাহ। এদিকে, কুমিল্লায় বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখনও লোকালয়ে ঢুকছে ঢলের জল। জেলার ৭টি উপজেলায় পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষ। বন্যা দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট।

উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোতে দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি। রাতের ব্যবধানে জেলার অধিকাংশ এলাকায় পানি বেড়েছে এক থেকে দেড় ফুট। যাতে ৮ উপজেলায় পানিবন্দি ২০ লাখ মানুষ। তীব্র হচ্ছে বানভাসিদের দুর্ভোগ।

জেলার সদর, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় বন্ধ বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক। ১ হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ২ লাখের বেশি মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্গতদের ভিড়। পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে ইতোমধ্যেই দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। জেলাটিতে এ পর্যন্ত বন্যায় ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেছে ১০ জনের। হাসপাতালে তৈরি হয়েছে ওষুধের সংকট।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘সব জায়গায় পানি উঠে গিয়েছে। আমাদের চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে।’

আরেকজন বলেন, ‘খাবারের অনেক কষ্ট হচ্ছে। রান্না করার মতো অবস্থা নেই।’

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রায় সবকয়টি ইউনিয়নই এখন প্লাবিত। তাই ক্রমেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে এই জনপদের মানুষের। ভালো নেই, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর, রামগঞ্জও। সবমিলিয়ে প্রায় জেলার ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি। বন্যা কবলিতরা ত্রাণের আশায় থাকলেও দুর্যোগের কারণে ব্যাহত হচ্ছে ত্রাণ সরবরাহ।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘ঘরের ভিতর পানি উঠে গিয়েছে। কেউ কেউ এক চকির উপর আরেক চকি দিয়ে থাকতেছে।’

এদিকে, নদীর পানি কমলেও কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং উপজেলায় বাড়ছে বন্যার পানি। এসব এলাকায় নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। জেলার ৭টি উপজেলায় পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষ। বন্যা দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট। পর্যাপ্ত নেই ত্রাণ সহায়তা।

আরেকজন বলেন, ‘বিদ্যুৎ নেই যার ফলে বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছি।’

ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হলেও কমেনি দুর্ভোগ। লোকালয় থেকে পানি নামছে ধীরগতিতে। এতে বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বন্যা দুর্গতরা। ত্রাণ দেয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট এখনও চরমে। রয়েছে স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধের সংকটও। বন্যায় এখনও পানিবন্দি ১ লাখ মানুষ। বাড়িঘরে থাকার মত অবস্থা নেই বেশিরভাগ মানুষের। ছাগলনাইয়া, সাতসতি, দাইয়াবিবিসহ ২৫টি গ্রামে এখনও ত্রাণ না পৌঁছানোর অভিযোগ রয়েছে।

ভারতের ফাঁরাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেয়া হলেও এখনো স্বাভাবিক রাজশাহী পদ্মা নদীর পানি। আগামী তিনদিন পর্যন্ত পানি বাড়বার আশঙ্কা নেই বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে শহরের উজানে বেশকিছু জায়গার অরক্ষিত বাঁদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় গ্রামবাসী।

এদিকে মৌলভীবাজারে সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনও পানিবন্দি ২ লাখের বেশি মানুষ।

tech