ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার আঘাতে লণ্ডভণ্ড শ্রীলঙ্কার কয়েকটি অঞ্চল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৩

ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার প্রভাবে শ্রীলঙ্কায় বন্যা পরিস্থিতি
ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার প্রভাবে শ্রীলঙ্কায় বন্যা পরিস্থিতি | ছবি: সংগৃহীত
0

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার আঘাতে লণ্ডভণ্ড শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকটি অঞ্চল। বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এখনও নিখোঁজ ১৩৯ জন। এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেড় লাখ বাসিন্দা। শ্রীলঙ্কায় তাণ্ডবের পর এবার ভারতের তামিলনাড়ুর দিকে তীব্র বেগে ধেয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি। আগামীকাল (রোববার, ৩০ নভেম্বর) ভোরের দিকে আঘাত হানতে পারে। ‘ডিটওয়ার’ প্রভাবে পূর্বনির্ধারিত ৫৪টি ফ্লাইট বাতিল করেছে চেন্নাই বিমানবন্দর।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায় বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে অনেক অঞ্চল, যেখান থেকে বাঁচার জন্য নারিকেল গাছে উঠে আশ্রয় নিতে দেখা যায় এক বাসিন্দাকে। পরে হেলিকপ্টার দিয়ে করা হয় তাকে। ২৬ নভেম্বর দেশটির স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার আঘাত হানার প্রভাবে এমন নাজুক অবস্থা দ্বীপ রাষ্ট্রটির, চারদিকে কেবল বাঁচার আকুতি।

ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার প্রভাবে শ্রীলঙ্কায় সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধস এরই মধ্যে কেড়ে নিয়েছে শতাধিক প্রাণ। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আরও শতাধিক মানুষকে।

কেলানি এবং আত্তানাগালু নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় গতকাল (শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর) রাত থেকে দেশটির পশ্চিম প্রদেশের অবস্থা এখন সবচেয়ে খারাপ। বন্যা ও ভূমিধসে সহায় সম্বল হারিয়ে দিশেহারা মানুষ।

বন্যার পানিতে সড়ক মহাসড়ক ও রেলপথের অনেক জায়গা তলিয়ে থাকায় এবং ভূমিধসে পরিবহন যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় বাড়ছে কষ্টের মাত্রা, বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধার ও সাহায্য তৎপরতায়। রাজধানী কলম্বোসহ বেশিরভাগ অংশে বৃষ্টিপাত থেমে গেলেও, উত্তরের কিছু অংশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

মহাসড়ক ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী বিমল রথনায়েকে বলেন, ‘আমরা সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। এর কারণ হিসেবে রয়েছে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড়।’

আরও পড়ুন:

সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে সময় কাটছে শ্রীলঙ্কার লাখ লাখ মানুষের। এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় দেড় লাখ মানুষ। সরকারি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় ৪৫ হাজার বাসিন্দা।

এখনও নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করছেন অনেকে। আবার অনেকে ভিটা-মাটির মায়ায় ঝুঁকি নিয়েই শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এর আগে, ২০০৩ সালের জুনে হওয়া ভয়াবহ বন্যায় শ্রীলঙ্কায় ২৫৪ জন মারা গিয়েছিল।

২৬ নভেম্বর শ্রীলঙ্কায় আঘাত হানার পর ভারতের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া। আগামী দু’দিন ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝড়ো বাতাসের পূর্বাভাসে এরই মধ্যে ৫৪টি পূর্বনির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করেছে চেন্নাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

রোববার ভোরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর তামিলনাড়ু, পন্ডিচেরি এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দক্ষিণ-পশ্চিমে পৌঁছাবে বলে আভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।

বর্তমানে দেশটির উপকূলীয় এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার থাকলেও, আগামীকাল তা বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বা তারও বেশি হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

এসএইচ