দেশে এখন
0

কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বগুড়ায় কমেছে পাটের আবাদ

কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বগুড়ায় কমেছে পাটের আবাদ। ভরা মৌসুমে হাট বাজারে কিছুটা সরবরাহ বাড়লেও আগের মতো মান সম্মত পাট মিলছে না। বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায়। এতে লোকসানের মুখে পড়ছেন চাষিরা। ব্যাপারিদের অভিযোগ, পাটকলগুলো সময়মতো বকেয়া টাকা না দেয়ায় পাট কিনতে পারছেন না তারা।

সোনালী আঁশের ঝলমলে ছবি এখন অনেকটাই ফিঁকে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনার বিস্তৃর্ন চরাঞ্চলে কৃষকের একমাত্র অর্থকরি ফসল পাট। যেখান থেকে সারাবছরের সংসারের আয় ব্যয়ের হিসেব মেলে তাদের। তবে খড়া আর বন্যায় সে সমীকরণ মেলানো বেশ কঠিন। এবারেও হিসেবে মিলছে না কৃষকের। বন্যায় অনেক জমির পাট নষ্ট হয়েছে। সেই সাথে পাচ্ছেন না কাঙ্খিত দাম। তাই পাট বিক্রি করে লাভ করতে পারছেন না তারা।

কৃষকরা বলেন,' যদি বর্ষা তাহলে এক বিঘা জমিতে পাট হবে ৪ থেকে সাড়ে ৪ মণ, খরচা হবে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা, বেচা হবে ৮ হাজার টাকা। বহু টাকা খরচ পড়ে পাটের দামই তো নাই। একটা কামলাকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দেওয়া লাগে এখন পাট বেচা লাগসে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার।'

মৌসুমী ব্যবসায়ীরা হাটবাজার থেকে পাট কিনে বিভিন্ন পাটকলে সরবরাহ করেন। তবে এ বছর তেমন চাহিদা নাই পাটকলগুলোতে।অনেক ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী নগদে পাট কিনে পাটকলে দিচ্ছেন বাকিতে। এখনো টাকা পাননি অনেকে। টাকা না পাওয়ায় ব্যবসা বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে অনেক ব্যাপারির।

পাট ব্যবসায়ীরা বলেন, ' প্রায় ১৪-১৫ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে আছে সেই টাকা এখোনো পাচ্ছিনা আমরা টাকা দিতে গড়িমাসি করে যার জন্য আমরা সঠিক মতো পাট বেচাকেনা করতে পারিনা যার জন্য পাটের সঠিক মূল্য পায় না। ব্যবসা করে লাভের থেকে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে আমরা যে পাট বিক্রি করি মিলে টাকা ঠিক মতো পায় না পুঁজি ও কম। টাকা না থাকার কারনে ঠিক মতো ব্যবসা করতে পারছি না।'

বগুড়ায় মোট ৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হলেও শুধুমাত্র সারিয়াকান্দিতেই হয়েছে ৩ হাজার ৫শ' হেক্টর জমিতে। বন্যায় পাটের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কমেছে মান। বাধ্য হয়েই কম দামে এসব পাট বিক্রি করছেন কৃষক।

বগুড়া, সারিয়াকান্দি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, 'বিঘা প্রতি যাদের ১৯ থেকে ২০ হাজার টাকার পাট বিক্রি হচ্ছে পাটের যে উৎপাদন খরচ স্থানভেদে ১২ থেকে ১৪ হাজার হয়। কিছুদিন আগেই কিন্তু পাটের দামটা একটু ভালো ছিলো কৃষকরা যদি ৩ হাজারের বেশি করে দাম পেতো তাহলে আমি মনে করি তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতো।'

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি পাটকল ৩০টি। যার মধ্যে ২৯টি চালু রয়েছে। আর বেসরকারি খাতে পাটকলের সংখ্যা ২৮১। এর মধ্যে নানা জটিলতায় বন্ধ রয়েছে ৫৬টি। ফলে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে দেশে চালু থাকা পাটকলের সংখ্যা ২৫৪।

tech