ঢলের জলে তলিয়েছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, বাড়ছে জনদুর্ভোগ। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্গত এলাকার মানুষ। উঁচু আশ্রয়ের সন্ধানে অনেকে ছেড়েছেন বসতভিটা। গবাদিপশু ও গৃহস্থালি জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ছে দুর্ভোগের মাত্রা।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও ভয়াবহতা বাড়ছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে। একের পর এক বন্যা কবলিত হচ্ছে যমুনার তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চল। এরইমধ্যে প্লাবিত হয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা এবং ধুনোট উপজেলার অন্তত ১৫টি ইউনিয়ন। শুধু বসতবাড়ি নয়, ডুবছে কৃষকের পাট, ভুট্টা, মরিচ, বাদাম ও সবজি খেত।
স্থানীয় একজন বলেন, 'ঘরে পানি ঢোকার আগে ঘর থেকে কোনো জিনিস বের করতে পারিনি। গরু, ছাগল যেগুলো আছে সেগুলোরও খাওয়ার কষ্ট, আমাদের খাবারের কষ্ট হয়।'
পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে বন্যার্তদের শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহায়তার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
বগুড়ার সারিয়াকান্দির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, 'বেশ কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। আমরা সেসব এলাকার তালিকা করছি। এলাকাগুলোতে আমরা ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।'
কুড়িগ্রামেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে চর-দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা। ৬ উপজেলায় অর্ধ শতাধিক গ্রামে পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে ৪৭৫ হেক্টর বিভিন্ন ফসলের খেত। জীবন ধরনের অবলম্বন হারিয়েছে ভবিষ্যৎ নিয়েও বাড়ছে দুশ্চিন্তা।
অন্যদিকে, তিস্তার পানি বেড়ে রংপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও ক্রমেই পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। লোকালয় থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। তবে এখনও পিছু ছাড়েনি শঙ্কা, কাটেনি দুর্ভোগও।
প্রতিবছর বন্যা এলেই সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন নিম্নাঞ্চল ও চরের লাখো মানুষ। নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে দুর্ভোগ। অনিশ্চয়তায় পড়ে খাবার ও বিশুদ্ধ পানিসহ ঘর-গৃহস্থির তাবৎ জিনিসপত্র। এ অবস্থায় ত্রাণ ও পরিত্রাণ চায় বানভাসিরা। এ কারণে নদী খননসহ বাঁধ রক্ষার মধ্য দিয়ে বন্যা পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান চান তারা।