পারিবারিক ধারাবাহিকতায় এক সময় স্বল্পপুঁজি নিয়ে ছোট পরিসরে গবাদি পশু পালন শুরু করেন জাহিদ। এরপর ৪ বছর আগে তিন ভাইয়ের যৌথ উদ্যোগে রনহাটের ১২ কাঠা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেন এই গবাদি পশুর খামার। যেখানে গরুর পাশাপাশি আরও আছে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি উন্নত জাতের ছাগল ও গাড়ল।
এ বছর কোরবানির জন্য খামারটিতে পরিচর্যার মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৫ টি গরু। আর এসব গরুর যত্নে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন ৬ জন পরিচর্যাকারী। ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করণে প্রতিদিন তিন থেকে চার বেলা ভারি খাবার দেয়া সহ খামার পরিচর্যায় ব্যস্ততা বেড়েছে তাদের।
কর্মচারীদের একজন বলেন,'ব্যবসাতে লাভবান হবে দেখে আমরা পরিশ্রম করি। সকাল থেকে তাদের পরিচর্যা করা হয়।'
বর্তমানে প্রায় কোটি টাকার অধিক গবাদি পশু রয়েছে জাহিদের এই খামারে। আর প্রতিদিন এসব গরুর পরিচর্যায় ব্যয় করতে হয় ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে গোখাদ্যের বাড়তি দামের কারণে খামার পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছেন প্রান্তিক খামারিরা।
খামারিদের একজন বলেন, 'এবছর মাত্র ৩০ থেকে ৪০টার মতো গরু রেখেছি আমাদের আয় হচ্ছে না। পালন করতে প্রচুর ব্যয় করতে হচ্ছে।'
এবার ছোট-বড় মিলে জেলার প্রায় ১৫শ' খামারে কোরবানির পশু লালন-পালন করেছে খামারিরা। এরইমধ্যে অনেকেই বিক্রির জন্য হাটে তুলছেন তাদের যত্নে লালিত সেসব পশু। তবে গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় পশু পরিচর্যায় ব্যয় বেড়েছে তাদের। তাই হাটে পশুর কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে লোকসানের শঙ্কায় আছেন বেশিরভাগ খামারি ও গরু ব্যবসায়ী।
গরু ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'গরু খাবার ও পালন করতে প্রচুর খরচ হচ্ছে। প্রত্যেকটা গরুতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো ঘাটতি পরছে।'
আরেকজন বলেন, 'হাটে বেচা-কেনা কম। ক্রেতা তেমন নেই। এতে আমাদের লোকসান হচ্ছে।'
এ বছর রাজশাহীতে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত কোরবানির পশু উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোঃ ফজলে রাব্বি বলেন, 'এবার রাজশাহী জেলাতে গরুর চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় পাঠানো হবে।'
কোরবানি ঈদকে ঘিরে এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৮৩ হাজার ৩৬৫ টি গরু, ৩ লাখ ৪২ হাজার ছাগল ও ৩৬ হাজার ভেড়া সহ অন্যান্য কোরবানির পশু। এতে উদ্বৃত্ত থাকছে প্রায় লক্ষাধিক পশু।