শিক্ষা
দেশে এখন
0

পাঠ্যবই সংশোধনীর পরও বহু ভুল রয়ে গেছে

শিক্ষাবছরের ৫ম মাসে এসে মাধ্যমিকের ৪টি শ্রেণির ৩১টি বইয়ে প্রায় ১৫০ সংশোধনী দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। কিন্তু ৪ মাসেও অনেক ভুল এড়িয়ে গেছেন সংশোধনকারীরা। এনসিটিবি বলছে, চোখ এড়িয়ে যাওয়া ভুলের সংশোধনী আবারও দেয়া হবে।

বছরের প্রথম দিন সারাদেশের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দিয়েছে সরকার। বই উৎসবের পরদিনই ২ জানুয়ারি পাঠ্যবইয়ের ভুল-ভ্রান্তি ও অসঙ্গতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে ‘এখন টেলিভিশন’। যেখানে ৮ম ও ৯ম শ্রেণির বিভিন্ন বইয়ের তথ্যগত, বাক্যগত এবং বানানগত বিভিন্ন ভুলে তুলে ধরা হয়।

২০২৩ সাল থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়। সে বছর ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের নানান ভুল ছিল চোখে পড়ার মতো। সবমিলিয়ে পাঠ্যবই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন গতবারের ন্যায় এবারও ভুল সংশোধনে উদ্যোগ নেয় সরকার। এতোদিন পরে সংশোধনী দেয়া হলে সেগুলো শিক্ষকদের জানানো এবং শিক্ষার্থীর নিজ নিজ বইয়ে সংযোজন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর নির্দেশনা দিয়েছে।

৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণির ৩১টি বইয়ে প্রায় দেড়শ' ভুলের সংশোধনী দিয়েছে এনসিটিবি। যেখানে বাক্যগত, তথ্যগত আর বানানগত বিভিন্ন সংশোধনী দেয়া হয়েছে। আবার বইয়ের ভেতরে অপ্রয়োজনীয় শব্দ ও লাইন একেবারে বাদ দেয়া হয়েছে।

এই যেমন ৯ম শ্রেণির 'শিল্প ও সংস্কৃতি' বইয়ে 'পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়' বাক্যটি ১৫ বারের মধ্যে ১৩ বারই ভুল করে পৃথিবীর জায়গায় 'পৃখিবী' লেখা হলেও একবারও সংশোধনকারীদের চোখে পড়েনি। অনেক ন-ত্ব বিধানের সংশোধন হয়নি। আগের হ্রস্ব ই-কার, দীর্ঘ ঈ-কারের ভুলও থেকে গেছে। পাকিস্তানের পাষ্কিস্তান হওয়া, প্রাতিষ্ঠানিকের প্রতিষ্ঠানিক নানা ভুল বানানের সংশোধনও হয়নি। এছাড়া কিছু জায়গায় বাক্য গঠনের ভুল তো আছেই।

এমন ভুলে বই লেখার প্রক্রিয়াগত ত্রুটিকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এতে ক্ষতির মুখে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, জানুয়ারিতে বই বিতরণ করা হয়েছে। আর বছরের মাঝামাঝি এসে পাঠ্যবই সংশোধন করা হচ্ছে। কেন এতো দেরিতে এই কাজগুলো করা হচ্ছে?’

তিনি আরও বলেন, ‘বই লেখার প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণেই এমন ভুল থেকে বের হতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।’

এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা সবসময়ের জন্য সংশোধনী দেয়ার জন্য তৈরি আছি। আর যেসব ভুলের সংশোধনী দেয়া হয়নি। পরে তারও সংশোধন দেয়া হবে।’