গতবছর থেকে বাস্তবায়ন হওয়া নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক শুরু থেকেই। কারিকুলামের মৌলিক উপাদানগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতাই এর সবচেয়ে দুর্বলতম দিক বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা। এই কারিকুলামই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের অধিকাংশ শ্রেণিতে চলছে, যা বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে নতুন করে ভাবছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা পড়েছেন দ্বিধায়। বিশেষ করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। আর দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য ইতিবাচক হয় শিক্ষাক্রম নিয়ে সেই কাজ শুরু করেছে এনসিটিবি।

নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে মনে করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।

নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম। আজ (শনিবার, ১০ আগস্ট) বিকেলে এখন টিভিকে মুঠোফোনে তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষাবছরের ৫ম মাসে এসে মাধ্যমিকের ৪টি শ্রেণির ৩১টি বইয়ে প্রায় ১৫০ সংশোধনী দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। কিন্তু ৪ মাসেও অনেক ভুল এড়িয়ে গেছেন সংশোধনকারীরা। এনসিটিবি বলছে, চোখ এড়িয়ে যাওয়া ভুলের সংশোধনী আবারও দেয়া হবে।

বর্তমানে দেশে প্রাথমিকে প্রতি ৫ জনে একজন এবং মাধ্যমিকে প্রতি ৩ জনে একজন শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ১৩.৯৫ শতাংশ, মাধ্যমিকে ৩৫.৯৮ শতাংশ। এক পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে এখন থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িকের মতো কোনো পরীক্ষা হবে না। তবে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে এবং সেটি হবে অ্যাপসের মাধ্যমে।

দেশে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর পর থেকে অভিভাবকদের মাঝে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আস্থা হারিয়ে সামর্থ্যবানদের অনেকেই ঝুঁকছেন ইংলিশ মিডিয়ামে। শিক্ষাবর্ষের মাঝামাঝিতে এবার বাংলা মিডিয়াম থেকে ইংলিশ মিডিয়ামে আসার প্রবণতা ছিল অনেক বেশি। শিক্ষাবিদরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে হলে মূল্যায়ন পদ্ধতির বিষয়টি যেমন পরিষ্কার করতে হবে তেমনি সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

'শিক্ষাঙ্গনে নৈতিক স্থলনের ঘটনাগুলো খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানিসহ অন্যান্য যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে তা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষকদের থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে থাকতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে হবে।'

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, ভবিষ্যতে শিক্ষায় পদ্মা সেতুর চেয়ে বড় প্রকল্প নেয়া হবে। সে প্রকল্প শুধু অবকামোগত হবে না। শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন এবং শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য এই প্রকল্প নেয়া হবে।

মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের আভাস শিক্ষামন্ত্রীর