পর্যটনে অপার সম্ভাবনার সমুদ্র শহর কক্সবাজার। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কিংবা প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন কেন্দ্রীক পর্যটন বিকশিত হলেও বিকাশ হয়নি নৌ-পর্যটনের।
তবে এবার কক্সবাজারে নৌ-পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে কাঠের তৈরি বিলাসবহুল নৌকা 'স্বপ্নতরী'। অপরূপ কারুকাজের এ নৌযান ইতোমধ্যে পর্যটক ও স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে।
স্থানীয় একজন বলেন, 'সন্ধ্যার পর কক্সবাজার নগরীতে ভূতুড়ে একটা অবস্থা তৈরি হয়। এখানে রাতের কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল না। এখন পর্যটকরা 'স্বপ্নতরী'তে করে আমাদের কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে বড় করে যে সমুদ্রের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা উপভোগ করতে পারবে। এছাড়াও কক্সবাজারের আরও অনেক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে।'
কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, 'এখানে সকাল থেকে রাত ১০টা বা ১১টা পর্যন্ত সবধরনের খাবার পাওয়া যাবে। এতে গান-বাজনাসহ অনেক কিছু থাকবে।'
'স্বপ্নতরী'র ধারণ ক্ষমতা ১৪৬ জন। প্রতিদিন সকাল ১০টায় নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে যাত্রা করে পর্যটকরা দেখতে পারবেন মহেশখালী, সোনাদিয়া, শাপলাপুর উপকূলের অপরুপ সৌন্দর্য, ঘন প্যারাবন আর গাঙচিল। এ যাত্রায় বিকেল ৫টায় বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে পর্যটকরা ঘাটে ফিরবেন।
এরপর আবার সন্ধ্যা ৭টায় যাত্রা করে বাঁকখালী নদীর কস্তুরা ঘাট নতুন ব্রিজ, নাজিরারটেক নতুন এয়ারপোর্ট রানওয়ে হয়ে মহেশখালীর আশপাশ ঘুরে ঘাটে ফিরবেন পর্যটকরা। দিনের যাত্রায় জনপ্রতি খরচ পড়বে ১ হাজার ৬০০ আর সন্ধ্যার যাত্রায় গুনতে হবে ২ হাজার টাকা।
কক্সবাজার উপকূল ঘিরে নৌ-পর্যটনে এমন বিনিয়োগ, সাধারণ পর্যটনের বিকাশেও অপার সম্ভাবনা ও সুযোগ বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কক্সবাজার-০২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, 'প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা কক্সবাজার এসে বীচে যাওয়ার পর কক্সবাজারে তাদের আর কোনো কাজ থাকে না। তারা মহেশখালী, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া যেতে চায়। এ ধরনের আরও বিনিয়োগ দরকার।'
৮০ ফুট দীর্ঘ ও ২০ ফুট প্রস্থের 'স্বপ্নতরী' তৈরিতে সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর। এর অপরুপ কারুকাজ মুগ্ধ করবে ভ্রমণপিপাসুদের। এতে ব্যবহার করা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির ইঞ্জিন ও জেনারেটর। যা উত্তাল সমুদ্রও পাড়ি দিতে সক্ষম।
এছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তায় নৌযানটিতে রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট, বয়া ও আগুন নেভানোর সরঞ্জাম।