দেশে এখন
0

জনবল সংকটে নোয়াখালীর তিন রেলস্টেশন বন্ধ

জনবল সংকটে নোয়াখালীর ৭টি রেলস্টেশনের মধ্যে ৩টি স্টেশন বন্ধ রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাতে নষ্ট হচ্ছে অফিসের সরঞ্জাম আর চুরি হয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল।

ব্রিটিশ আমলে নোয়াখালীর হরিনারায়ণপুর রেলস্টেশনের যাত্রা শুরু হয়ে দীর্ঘদিন চলার পর ২০১৫ সালে বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন সকাল-বিকাল এই রুটে ট্রেন চললেও এই স্টেশনে থামে না কোন ট্রেন। যাতে যাত্রী উঠা-নামা আর পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। ঐতিহ্যবাহী মাইজদী আর বজরা স্টেশনেরও একই অবস্থা।

স্থানীয়রা বলেন, 'আমরা ঠিকমতো টিকিট পাই না, এই জন্য মাইজদী যাওয়া লাগে। এখানে আগে এতবেশি যাত্রী ছিল, একটা বাজারও ছিল। ট্রেন না আসার কারণে আজকে সেই বাজারটাও বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখানে দোকান করি কিন্তু মানুষ আসে না। স্টেশনটা চালু থাকলে মানুষের যাতায়াত থাকতো।'

একসময় যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকা এসব স্টেশন এখন অচল। যাতে পার্শ্ববর্তী অন্য স্টেশন থেকে স্থানীয়রা পণ্য বুকিং দিতে বাড়তি টাকা খরচ হয়। আর বাড়তি খরচ থেকে বাঁচতে রেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বেশিরভাগ মানুষ। এতে কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন এখানে কর্মরত কুলি-মজুররা।

যাত্রীরা বলেন, 'এই স্টেশনে মাস্টার, চৌকিদার নাই। আমাদের যাতায়াত করতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে।'

উন্নয়নকর্মী আবদুল আউয়াল বলেন, 'অভ্যন্তরীণ গণপরিবহনের জন্যই রেল ব্যবস্থাটাকে কাজে লাগানো উচিত। শত বছর আগের যে বিনিয়োগটা বন্ধ হয়ে গেছে। সেটার যথাযথ ফেরত আমরা নিচ্ছি না।'

প্রতিটি রেলস্টেশনে ন্যূনতম ৩ জন স্টেশন মাস্টার ও সহকারী স্টেশন মাস্টার, ৩ জন পয়েন্টসম্যান ও ১ জন পোর্টার থাকার নিয়ম রয়েছে। তবে হরিনারায়নপুর, মাইজদী ও বজরা রেলওয়ে স্টেশনের সবগুলো পদ শুন্য। যাতে স্থবির হয়ে পড়েছে রেল যোগাযোগ।

যদিও অচিরেই জনবল নিয়োগের মাধ্যমে বন্ধ থাকা এসব স্টেশন চালু করা হবে বলছেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম। বলেন, 'ইতিমধ্যে বন্ধ এসকল স্টেশনগুলোতে জনবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য লিখিত পরীক্ষা হয়ে গেছে। যতটুকু জানি সামনে মৌখিক পরীক্ষা হবে। এরপরেই আমরা বন্ধ রেলস্টেশনগুলো চালু করতে পারবো বলে আশা করি।'

২০১৩ সালে বন্ধ করে দেয়া হয় বজরা স্টেশন। এর দুই বছর পর বন্ধ হয় হরিনারায়ণপুর ও মাইজদী স্টেশন। চালু থাকা অবস্থায় এ ৩টি স্টেশন থেকে বছরে প্রায় ১ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আয় হত।