বিশেষ প্রতিবেদন , পরিষেবা
অর্থনীতি
0

৩৩৫ কোটি টাকা খরচে নির্মিত রূপপুর রেলস্টেশনের ভবিষ্যৎ কী

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ ও মালামাল আনার কথা বলে ৩৩৫ কোটি টাকা খরচে নির্মাণ করা হয় রূপপুর রেলস্টেশন। অথচ উদ্বোধনের ২ বছরেও মালামাল আসেনি একবারও। অযত্নে পড়ে আছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। এ নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে অনিশ্চিত রূপপুর স্টেশনের ভবিষ্যৎ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অবহেলার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চকচকে লাগেজ ভ্যান, সদ্য ভারত থেকে কেনা ওয়াগন। নতুন রেলপথ। পাকশী রেলস্টেশনের দক্ষিণে, পদ্মা নদীর তীরে, ঠাঁই দাঁড়িয়ে আস্ত এক স্টেশন। প্লাটফর্ম থেকে উঁকি দিলে অদূরে দেখা মিলবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের।

ট্রেন আছে, পণ্যবাহী সারি সারি ওয়াগনও আছে। নেই শুধু কোনো কার্যক্রম। মাসের পর মাস এভাবে পড়ে আছে শত কোটি টাকার সরঞ্জাম।

কথা ছিল এই স্টেশনে আসবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ ও মালামাল। এমন আশা দেখিয়ে প্রায় ২ বছর আগে এই স্টেশন উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। অথচ ২ বছরে কোনো পণ্য আসেনি এই স্টেশনে। তাতে এটি এখন গোচারণভূমি আর পিকনিক স্পট।

স্টেশনের চা দোকানি বলেন, ‘চালু থাকলে তো আমরা বাঁচতাম। লোকজন যাওয়া আসা করলে বেচাকেনা বাড়তো।’

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘চালু থাকলে মানুষের কাজ বাড়তো। এখানে কাজ করে জীবনযাপন করতে পারতো।’

৩৩৫ কোটি টাকা খরচে নির্মিত রেলপথের ভবিষ্যৎ জানতে স্টেশন ভবনে গিয়ে দেখা মেলেনি কোন কর্মকর্তার। জানা গেল, শুধু রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মী ছাড়া কেউ আসেন না স্টেশনে।

যাদের খেয়াল রাখার কথা সেই পাকশী বিভাগীয় অফিস থেকে মেলেনি সদুত্তর।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মন্ডল বলেন, ‘আমাদের লাইনে ট্রেন তো চলছে। কেন তারা সরে যাচ্ছে সেফটির কোনো ইস্যু আছে কিনা জানি না।’

রেলওয়ের সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলছেন, ব্যবহার উপযোগী করে রাখা হয়েছে স্টেশন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাইলেই ব্যবহার করতে পারবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে এইটা পুরোপুরি রেডি করে রাখা হয়েছে। যখনই তারা চাহিদা চাইবে তখনই ব্যবহার করতে পারবে।’

যদিও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প পরিচালকের কণ্ঠে ভিন্ন সুর। বলছেন, এটা রেলওয়ের উপর নির্ভর করে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান বলেন, ‘এইটা সম্পূর্ণটা নির্ভর করছে রেলওয়ের উপর। রুপপুর প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট না।’

দুই প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে অনিশ্চিত রুপপুর স্টেশনের ভবিষ্যৎ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘অবহেলার অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কেস হওয়া দরকার। যারা এর সাথে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।’

ইএ