৬৫০ টাকায় গরুর মাংস, মানছে না অনেক ব্যবসায়ী

0

ঢাকায় ৬৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত জানেন সব মাংস ব্যবসায়ী; তবে মানছেন না অনেকেই।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউনহল কাঁচাবাজারে ৪০ বছর আগে বাবার হাত ধরে ১৬ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছিলেন মোহাম্মদ শাহজাহান। বছর বছর বাড়তে বাড়তে মাংসের দাম সম্প্রতি ৮০০ টাকা ছুঁয়ে যায়। দামের চাপে সচরাচর গরুর মাংস পাতে না তুলতে পারার আক্ষেপ দেখেছেন নিজের চোখে। মাসখানেক ধরে সরকারি সংস্থার চাপাচাপিতে ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করছেন। তবে লাভের মুখ দেখতে গরুর মাথার হাড় ও চর্বি যুক্ত করেছেন।

শাহজাহান বলেন, ‘আমরাতো নিজেরা কম দামে মাংস বিক্রি করছি, কিন্তু এই দামে বিক্রিতে আমাদের লোকসান হচ্ছে। আসলে এই দামে বিক্রি হলে আমাদের যেমন লোকসান তেমনি ক্রেতাদেরও লোকসান হচ্ছে। গরুর মাথা আলাদাভাবে ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। কিন্তু দাম সমন্বয় করতে গিয়ে এই মাথাও মাংসের সঙ্গে মেশাতে হচ্ছে। এতে কিন্তু ক্রেতারা ঠকছেন।’

হাড়ের পরিমান কম নিতে চাইলে গুণতে হবে অতিরিক্ত টাকা। আর এক মাসের জন্য বেঁধে দেয়া ৬৫০ টাকা কেজিতে মাংস নিতে চাইলে ২০০ গ্রাম করে হাড় ও ৫০ গ্রাম করে চর্বি যুক্ত করবেন তারা।

কোন কোন ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামের সাথে খরচের হিসাব মেলাতে না পেরে অতিরিক্ত মূল্যে মাংস বিক্রি করছেন। তারা বলেন, ‘চর্বি, হাড় বেশিরভাগ ক্রেতারা নিতে চায় না, এভাবে হলে আমরা এই দামে শুধু মাংস বিক্রি করবো কীভাবে?’

এদিকে গরুর মাসের দামের লাগাম টানায় বেড়েছে বিক্রি। স্বস্তি সাধারণ মানুষের মাঝে। দামের তাপে মুখ ফিরিয়ে নেয়া গ্রাহকরাও ফিরেছেন মাংসের দোকানে। ক্রেতারা জানান, ‘আমরা বহুদিন পরে কম দামে মাংস কিনতে পারছি। প্রায় ২০০ টাকা কমে গরুর মাংস কিনতে পেরে ভালাই লাগছে।’

তারা আরও বলেন, '৮০০ টাকা কেজির গরুর মাংস ২ মাসের ব্যবধানে যদি ৬৫০ টাকায় নামানো যায়, তা হলে বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামেও লাগাম দেয়া সম্ভব।'

মাংসের দাম ৫০০ টাকার মধ্যে আনতে চায় সরকার। তাই অতিরিক্ত মুনাফা ভোগীদের লাগাম টানা জরুরি বলে দাবি খাত সংশ্লিষ্টদের। তারা বলেন, ভোক্তা অধিকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। সবাই কম দামে বিক্রি করলেও কয়েকজন বেশি দামে বিক্রি করছে। আসলে তাদের জন্যতো সবাইকে দোষ দেয়া যাবে না। ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করলে লাভ কম হলে, গরুর পরিমান বাড়ালে লাভ অবশ্যই হবে।

দেশে প্রতি বছর ১ কোটি গরুর চাহিদা রয়েছে। গরুর লালন-পালনের খরচের লাগাম টানা গেলে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

আরও পড়ুন: