মেক্সিকো উপসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত সংযোগস্থাপনকারী এ রেলপথটিকে দেখা হতো সীমাহীন সম্ভাবনার যোগসূত্র হিসেবে। কিন্তু রাতারাতি মেক্সিকোবাসীর জন্য এক আতঙ্কে পরিণত হয়েছে এ রেল রুট।
২৪১ যাত্রী আর চালকসহ নয় রেলকর্মী নিয়ে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে প্রাণ গেছে বহু মানুষের। এখনও হাসপাতালে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে অনেকে।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘স্টেশনে এক বন্ধুকে বিদায় দিতে গেছিলাম। বাড়ি ফেরার পাঁচ মিনিট পর জানতে পারি ট্রেন আসবে না। কারণ তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।’
রোববার মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যের নিজান্দা শহরের কাছে বাঁক নিতে গিয়ে আন্তঃমহাসাগরীয় ট্রেনটির চারটি বগির তিনটিই লাইনচ্যুত হয়। এসময় অনেক যাত্রী পাশের খাদে পড়ে যান। কেউ কেউ গাছের ডাল-শেকড় আকড়ে প্রাণে বাঁচেন। তবে বগিগুলো লাইনচ্যুত হওয়ার কারণ এখনও জানা যায়নি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল।
আরও পড়ুন:
মেক্সিকোর রেলওয়ে নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে দেশটির নৌবাহিনী। তারা জানিয়েছে, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটিতে দুটি ইঞ্চিন ও চারটি বগি ছিল। প্রথম ও শেষ বগিতে থাকা যাত্রীদের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। মাঝের বগিতে যারা ছিলেন তাদের অনেকে পা ও কাঁধে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সাড়ে তিন শতাধিক নৌ সদস্য, ২০টি যানবাহন, চারটি অ্যাম্বুলেন্স ও তিনটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠায় নৌবাহিনী। এছাড়া উদ্ধার অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক ড্রোন।
দুর্ঘটনার পর গভীর উদ্বেগ জানিয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্সে বার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেনবাউম। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর হতাহতের পরিবারগুলোর সাথে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। শোক জানিয়েছেন ওয়াহাকার গভর্নর সলোমন জারা ক্রুজ। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
দুই বছর আগে ওই অঞ্চলটিতে কৌশলগত বাণিজ্য করিডর, বন্দর, রেলওয়ে ও শিল্পভিত্তিক অবকাঠামো সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর। তিনিই উদ্বোধন করেন আন্তঃমহাসাগরীয় এ রেলপথ।





