বছরশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশেই সবপক্ষের সম্মতি মিলেছে বলে দাবি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের। আর ট্রাম্পের দাবি, রাশিয়ার সাথে সংঘাত বন্ধে শান্তিচুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন। যদিও, বেশ সতর্ক কণ্ঠেই স্বীকার করে নিয়েছেন চুক্তির পথ এখনও কাঁটায় পরিপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, এক-দু'টো ভীষণ কাঁটাসঙ্কুল সমস্যা বিদ্যমান। খুব জটিল সমস্যা। আমার মনে হয় যে আমরা খুব ভালোভাবে এগোচ্ছি। আজ অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো গেলো মাসজুড়ে এ নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। এটা কোনো একদিনে সেরে ফেলার চুক্তি নয়। বরং ভীষণ জটিল একটা বিষয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আমরা শান্তি পরিকল্পনার সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। এর মধ্যে আছে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা, যার ৯০ শতাংশে সবাই সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার শতভাগ নিয়ে একমত। যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ-ইউক্রেন নিরাপত্তা নিশ্চয়তাও প্রায় সর্বসম্মত।
আরও পড়ুন:
মূলত ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত বিভিন্ন অঞ্চল, বিশেষ করে পূর্বে অবস্থিত দনবাসের ভাগ্য অমীমাংসিত থেকে যাওয়া নিয়েই এ স্বীকারোক্তি ট্রাম্পের। গেলো অক্টোবর পর্যন্ত দনবাসের ৯০ শতাংশ এলাকার দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। অঞ্চলটিতে মোট জনগোষ্ঠীর ৩৮ শতাংশ রুশ আদিবাসীর বিপরীতে ইউক্রেনীয় আদিবাসীর হার ৫৮ শতাংশ হলেও, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের এ অংশকে নিজেদের সীমান্তে যুক্ত করতে চায় রাশিয়া।
বড় ধরনের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পদ বলেই ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের কেন্দ্রে দনবাসের নিয়ন্ত্রণ। ফলে অঞ্চলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যাওয়ায় ট্রাম্প-জেলেনস্কির শান্তিচুক্তি নিয়ে খুব একটা আশাবাদী হতে পারছে না যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ।
ইউক্রেনের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমার মনে হয় না যে যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হচ্ছে। চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। চুক্তির পরেও, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে। পুতিনের কোনো অঞ্চল দরকার নেই, ডনবাসও দরকার নেই। সে চায় ইউক্রেনের মানুষকে শেষ করতে। আমাদের মতো একটা জাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারলে অঞ্চলের দখল এমনিতেই সে পেয়ে যাবে। আগেও অনেকবার বলা হয়েছে যে যুদ্ধ শেষ হলো বলে। স্রেফ সময় নষ্ট করা হচ্ছে।
২০২২ সাল থেকে চলমান যুদ্ধের এ পর্যায়ে, ইউক্রেনের দনবাসের অন্তর্ভুক্ত দোনেৎস্ক এবং ঝাপোরিঝিয়ার আরও ছয়টি বসতির দখল নিয়েছে রাশিয়া। একইদিন রোববার রাশিয়ার একটি তেল পরিশোধনাগারে হামলার দাবি করেছে ইউক্রেন।





