যুক্তরাষ্ট্রে চলমান কয়েনের প্রায় ৬০ শতাংশই এখন ব্যবহারহীন অবস্থায় পড়ে আছে। ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির ফলে এক সেন্ট মুদ্রার ব্যবহারও দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এক সেন্ট মূল্যের প্রায় ৩০ হাজার কোটি মুদ্রা বাজারে রয়েছে। যা লেনদেনের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি।
তামা ও দস্তার তৈরি এক সেন্ট বা পেনি মুদ্রা প্রথম চালু হয় ১৭৯৩ সালে। সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের প্রতিকৃতি সংবলিত এক এক সেন্ট তৈরিতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪ সেন্ট। যা এক দশক আগের তুলনায় দ্বিগুণ। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের দাবি, এই মুদ্রার উৎপাদন বন্ধ করলে, প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের সাশ্রয় হবে সাড়ে ৫ কোটি ডলারেরও বেশি।
মার্কিন ট্রেজারার ব্র্যান্ডন বিচ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে লেনদেনের ক্ষেত্র দ্রুত আধুনিকায়নের ফলে ট্রেজারি বিভাগ ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করেন, ১ পেনি বা সেন্টের কার্যকারিতা এখন খুব একটা নেই। পেনির অব্যাহত উৎপাদন বন্ধ করলে মার্কিন জনগণের চাহিদার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
আরও পড়ুন:
বুধবার ফিলাডেলফিয়া মিন্টে এই মুদ্রার শেষ ব্যাচের কয়েন তৈরি করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ইতি টানা হয় ২৩০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা এক সেন্ট মুদ্রার ঐতিহাসিক অধ্যায়ের। উৎপাদন বন্ধ হলেও বাজারে প্রচলিত মুদ্রাগুলো কার্যকর থাকবে।
ব্যয় কমানো ও ডিজিটাল লেনদেনের যুগে তাল মেলাতে এমন সিদ্ধান্ত নিলো যুক্তরাষ্ট্র। পেনির ঘাটতির কারণে এরইমধ্যে পণ্যের দাম সমন্বয় করতে শুরু করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এখন পেনি না থাকলে গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। যার ফলে পণ্যের দাম কিছুটা সমন্বয় করতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর।’
সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিপাকে সাধারণ ক্রেতা। কারণ দাম সমন্বয়ে পণ্যের দাম কিছুটা বাড়ছে। রিচমন্ড ফেডারেল রিজার্ভের তথ্য বলছে, এতে ভোক্তাদের বছরে অতিরিক্ত খরচ হতে পারে প্রায় ৬০ লাখ ডলার। এদিকে, পাঁচ সেন্ট মূল্যের নিকেল মুদ্রার উৎপাদন খরচ প্রায় ১৪ সেন্ট। এবার সেটিও বন্ধের চিন্তা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এতে ভোক্তাদের বার্ষিক বাড়তি ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি ডলার।
বিশ্বের অনেক দেশই তাদের স্বল্পমূল্যের মুদ্রার ব্যবহার বন্ধ করেছে। কানাডা সবশেষ এক সেন্টের কয়েন তৈরি করে ২০১২ সালে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ১৯৯০-এর দশকে এক ও দুই সেন্টের কয়েন বাতিল করে। ডিজিটাল লেনদেন বাড়ার কারণে ২০২৪ যুক্তরাজ্য ১ ও ২ পেনি কয়েন তৈরি বন্ধ করে দেয়।





