প্রিন্সেস ডায়ানার প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছিলেন ট্রাম্প; পাঠাতেন গোলাপ-অর্কিড

প্রিন্সেস ডায়ানা, ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রিন্সেস ডায়ানা, ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি: সংগৃহীত
0

ছয় বছর বয়সে মায়ের কাছ থেকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতি আগ্রহ থেকে একসময় প্রিন্সেস ডায়ানার প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিয়মিত গোলাপ ও অর্কিড পাঠানোয় বেশ উদ্বিগ্নও হয়ে পড়েছিলেন ডায়না। তবে সেই রাজ পরিবারের সঙ্গে ট্রাম্পের দূরত্ব তৈরি হয়নি। বরং একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ব্রিটেনে দু’বার রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

স্টকল্যান্ডের বংশোদ্ভূত মা মেরি অ্যান ম্যাকলিওডের কাছ থেকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতি ছয় বছর বয়স থেকেই আকৃষ্ট হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৯৫৩ সালের ২ জুন সারাদিন টেলেভিশনের পর্দায় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে আরোহণের দৃশ্য বিমুগ্ধ হয়ে দেখেছিলেন তার মা। সেই ঘটনা ছোট্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরও প্রভাব ফেলে। ‘দ্য আর্ট অব দ্য ডিল’ বইয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতি মা- মেরি অ্যান ম্যাকলিওডের ভালোবাসা নিজের ওপরও কতটা প্রভাব ফেলেছিল, সে কথাও তুলে ধরেছেন ট্রাম্প।

সেই থেকে রাজকীয় আড়ম্বর, ঐতিহ্য ও মর্যাদা ট্রাম্পের কাছে এক ধরনের আসক্তি হয়ে ওঠে। তবে ব্রিটিশ রাজপরিবারে যিনি ট্রাম্পকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছিলেন, তিনি হলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। নিজের দ্বিতীয় বই ‘দ্য আর্ট অব দ্য কামব্যাক’-এ ট্রাম্প লিখেছিলেন, তার একমাত্র 'আফসোস' হলো ডায়ানাকে প্রণয় নিবেদনের সুযোগ না পাওয়া। এমনকি প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ডায়ানার বিয়ে বিচ্ছেদের পর– ১৯৯৬ সালে ট্রাম্প নাকি সত্যিই তাকে ভালোবাসার প্রস্তাব দেয়ার চেষ্টাও করেছিলেন।

বিবিসির সাবেক উপস্থাপক সেলিনা স্কটের বর্ণনায় ওঠে এসেছে এসব তথ্য। ‘দ্য সানডে টাইমস’ পত্রিকায় স্কট লিখেছিলেন যে, ডায়ানা তাঁকে বলেছিলেন ট্রাম্পকে দেখলে রাগে তাঁর ‘গা শিরশির করতো’। এমনটি ডায়নার অ্যাপার্টমেন্টে নিয়মিত গোলাপ ও অর্কিড পাঠাতেন ট্রাম্প। যা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্নও হয়ে পড়েছিলেন ডায়না।

ডায়ানার মৃত্যুর অল্প কিছুদিন পর, ১৯৯৭ সালে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, চাইলে তিনি তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে পর্যন্ত জড়াতে পারতেন। তবে ২০১৬ সালে তা অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেছিলেন, ডায়ানাকে তিনি কেবল ‘মনোমুগ্ধকর ও চমৎকার একজন নারী’ হিসেবেই দেখতেন।

আরও পড়ুন:

এমনকি ১৯৮০-এর দশকে ট্রাম্প যখন নিউইয়র্ক নগরে নতুন একজন আবাসন ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তখন ট্যাবলয়েডগুলোতে খবর বের হয়—প্রিন্স চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানা ট্রাম্প টাওয়ারে ৫০ লাখ ডলার মূল্যের একটি কন্ডো কিনতে আগ্রহী। অনেকেই বলেছিলেন, ট্রাম্প নিজেই সম্ভবত গুজবটি ছড়িয়েছিলেন। পরে বার্তা সংস্থা এপি বাকিংহাম প্যালেসের একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল। এতে বলা হয়েছিল, ওই প্রতিবেদনের কোনো সত্যতা নেই।

এত কিছুর পরও একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ব্রিটেনে দু'বার রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ পেয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম স্ত্রী ডায়ানার প্রতি ট্রাম্পের দুর্বলতার খবর সামনে আসলেও হাসি মুখেই স্বাগত জানিয়েছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। এর আগে ২০১৯ সালেও রাষ্ট্রীয় সফরে ব্রিটেন গিয়েছিলেন ট্রাম্প। তখন প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখাও হয়েছিলো তার।

এসব ঘটনা রাষ্ট্রীয় সফরে প্রভাব ফেলে না বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন রানি এলিজাবেথের মুখপাত্র ডিকি আর্বিটার। ব্রিটিশ রাজপরিবার সব ধরনের নেতাকেই আপ্যায়ন করতে অভ্যস্ত এবং অতীতের কোনো ঘটনায় তাঁদের বিচলিত করে না।

এসএস