দ্বিতীয় মেয়াদের ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরে আতিথেয়তার কোনো কমতি রাখেনি ব্রিটেনের সরকার ও রাজ পরিবার। দেশের অভ্যন্তরে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ সামলে, সাম্প্রতিক টানাপড়েন পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের যে নিরন্তর চেষ্টা দেখা গেছে, তার বিনিময়ে কী পেলে ব্রিটিশ সরকার-এমন প্রশ্ন তুলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফরের একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূতকে অব্যাহতি দেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন উইন্ডসোর প্রাসাদে প্রবেশ করছেন তখন সেখানে ট্রাম্প-বিরোধীদের বিক্ষোভ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে ছিল না ব্রিটিশ সরকারের।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি, বিনিয়োগের মতো বিষয়ে গুরুত্ব দিলে খুব একটা ক্ষতি হয়নি স্টারমার প্রশাসনের। ১৫০ বিলিয়ন পাউন্ড বা ২৩০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের নিশ্চয়তা এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। যা বাস্তবায়নের কাজ করবে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও, চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাজ্য ৪ বছরের জন্য ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় মাইক্রোসফট। আর ২ বছরের জন্য দেশটিতে ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের আভাস দিয়েছে গুগল। এছাড়া আগামী এক দশকে যুক্তরাজ্যে ৯০ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করবে বিশ্বের বৃহত্তম সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন।
আরও পড়ুন:
প্রযুক্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা ছাড়াও পরমাণু শক্তি বৃদ্ধির বিষয়েও একধাপ এগিয়েছে এই দুই দেশ। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র- দুই জায়গায়ই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য চলতি সপ্তাহে আলাদা একটি চুক্তি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
তবে, ব্রিটেনের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক তেমন আলোচনায় ঝড় না তুললেও যুক্তরাজ্যের স্টিলজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ইস্যুতে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি স্টারমার প্রশাসন।
বাণিজ্য চুক্তি আলাদা রাখলে ট্রাম্প-স্টারমার বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে যুদ্ধ পরিস্থিতি। ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র- যুক্তরাজ্যের অবস্থান পুতিন বিরোধী হলেও, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার ক্ষেত্রে নিজেদের মতভেদের কথা স্বীকার করেছেন ট্রাম্প। তবে, বিশ্লেষকরা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও অভিবাসী নীতি নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও এই দুই দেশের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সমাধান সূত্র।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ব্যাপারে সন্দেহ প্রবণ হলেও এবার যুক্তরাজ্য সফর এসে জোটটির প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। যা ইঙ্গিত করে, ন্যাটো দেশগুলোর জিডিপির পাঁচ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে খরচের প্রতিশ্রুতিকে আমলে নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এতে করে ভবিষ্যতে ন্যাটোকে আরও অস্ত্র বিক্রি করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।





