যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ এক বিরল রায়। পর্নো তারকাকে ঘুষ দিয়ে তা গোপন করায় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন নিউইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্ট।
অথচ শাস্তির বদলে শর্তহীন মুক্তি পেয়েছেন এই রিপাবলিকান নেতা। এ রায়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউজের মসনদে বসতে যাচ্ছেন, যিনি রীতিমতো একজন আসামি। যদিও দণ্ডের বোঝা বইতে হবে না তাকে।
এদিন আদালতের অধিবেশনে স্বশরীরের উপস্থিত হতে না পারলেও ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৩৪টি অপরাধমূলক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আদালতের রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। উষ্মা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, নিউইয়র্কের বিচারব্যবস্থার এই বেহাল দশা তিনি মেনে নিতে পারছেন না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'আমি রাজনৈতিক ঈর্ষার শিকার। আমার মানহানি করতেই এই মামলাগুলো করা হয়েছে যেন নির্বাচনে হেরে যাই। বোঝাই যাচ্ছে, তারা সফল হয়নি। যারা আমাকে ভোট দিয়েছে তারা সরাসরি আদলতের কার্যক্রম দেখেছে। কিন্তু ইতিহাসের প্রথম রিপাবলিকান নেতা হিসাবে আমি রেকর্ড সংখ্যক ভোটে বিজয়ী হয়েছি।'
যদিও এই মামলার প্রধান বিচারপতি হুয়ান মার্চেন রয়টার্সকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান দেশের প্রেসিডেন্টকে ফৌজদারি মামলার শাস্তি থেকে রেহাই দিতে সাহায্য করেছে। প্রেসিডেন্টের অফিস এই বিরল সুবিধা পেলেও আদালতের এই রায় কোনোভাবেই ওই অপরাধের গুরুত্ব হ্রাস করে না বা অপরাধকে ন্যায্যতা দেয় না।
হুয়ান মার্চেন বরেন, 'প্রকৃতপক্ষে, প্রধান নির্বাহীর কার্যালয় ব্যতিক্রমী কিছু আইনি সুরক্ষা পেয়ে থাকে, যা অন্যান্য আইনি প্রতিবন্ধকতাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে স্পষ্ট ভাষায় বলতে গেলে, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত এই সুরক্ষা অপরাধকে ন্যায্যতা দেয় না।'
২০২৩ সালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক নথি জালের মামলা করেন ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ও ডেমোক্র্যাট নেতা অ্যালভিন ব্র্যাগ। অভিযোগ করেন, পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে ওই তারকাকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন ট্রাম্প।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৬ সালে নির্বাচনের আগে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সাথে নিজের সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, ১০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের আগে এই মামলা আদালতে গড়াক এমনটা চাননি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। গেল বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এই মর্মে একটি আবেদনও জমা দেন ট্রাম্পের আইনজীবী।
যদিও নয় বিচারপতির বেঞ্চের পাঁচজন ট্রাম্পের আবেদন নাকচ করে দেন। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এই মামলার রায়ের শুনানির দিন ধার্য করেন।