যুদ্ধের মাঝেই দ্বিতীয়বারের মতো গাজায় খুব সাধারণভাবে বড়দিন উদযাপন করলো খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ। কারণ গাজার বর্তমান অবস্থায় মুসলিম ও খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের উৎসবে নেই কোনো বাড়তি আনন্দ। টানা প্রায় ১৫ মাস ধরে এই উপত্যকার আবাসিক ভবন, স্কুল, হাসপাতাল এমনকি শরণার্থী শিবিরে চলছে ইসরাইলি আগ্রাসন।
সম্প্রতি রাতে হামলা জোরদার করছে আইডিএফ। ঘুমন্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর চলছে বর্বরতা। তাদের লক্ষ্যবস্তু আবাসিক ভবন ও শরণার্থী শিবির। প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহত। ইসরাইলি বাহিনীর বাধার মুখে পড়েছে জরুরি পরিষেবা ও উদ্ধার অভিযান। নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি হাসপাতালের ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ সাংবাদিক। তাদের বহনকারী গণমাধ্যমের গাড়িটি বিমান হামলার শিকার হয়।
এখানেই থামছে না নেতানিয়াহু'র সরকার। এবার গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা পুরোপুরি দায়িত্ব ইসরাইলের হাতে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী। যেখানে হামাসে কোনো শাসন থাকবে না।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, ‘আমরা বীরের মতো যুদ্ধ করে হামাসকে পরাজিত করেছি। তবে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। তাই ইসরাইলের নিরাপত্তায় গাজার নিয়ন্ত্রণ ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হাতে থাকবে। গাজা, লেবানন বা সিরিয়া থেকে কোনো হুমকি আসবে না। তা আমরা নিশ্চিত করবো।’
যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্ততায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরে দুই সপ্তাহ ধরে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি ইসরাইল ও হামাস। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তিনি সবসময় পজিটিভ ছিলেন। তবে হামাসের দাবি, চুক্তির নামে তাদের একের পর এক শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে ইসরাইল।
জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তাদের স্বজনেরা তেল আবিবে বিক্ষোভ নামে। এ সময় তারা টানা ৩ ঘণ্টা নীরবতা পালনের কর্মসূচির পরিকল্পনা নেয়। তবে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ইসরাইলি পুলিশ।
এদিকে, এক সপ্তাহে তৃতীয়বারের মতো ইসরাইল ভূখণ্ডে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। তাদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে দুটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন হুথির সামরিক মুখপাত্র।
হুথির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারা বলেন, ‘নিপীড়িত ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের সমর্থন ও সহায়তায় ইসরাইল ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাবে হুথি বিদ্রোহীরা। যুদ্ধবিরতি ও গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হুথিদের আক্রমণও চলবে।’
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের সবশেষ তথ্য মতে, শুধু নভেম্বর মাসেই গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২ লাখ ৮৫ হাজার ফিলিস্তিনি। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তার ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না ইসরাইলি বাহিনী।