বিশ্বসমর্থনে দৃঢ় হচ্ছে ফিলিস্তিনের অবস্থান

বিশ্বসমর্থনে দৃঢ় হচ্ছে ফিলিস্তিনের অবস্থান
বিশ্বসমর্থনে দৃঢ় হচ্ছে ফিলিস্তিনের অবস্থান | এখন টিভি
0

ফিলিস্তিনকে এখন পর্যন্ত সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বের ১৪৭টি দেশ। যা জাতিসংঘের ৭৫ শতাংশ সদস্য। গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর দীর্ঘ হচ্ছে সমর্থনের তালিকা। এর মধ্যে অনেক পশ্চিমা রাষ্ট্রও রয়েছে, যা ফিলিস্তিনকে বৈশ্বিক অবস্থানে দিনদিন আরো শক্তিশালী করে তুলছে।

কোনো ধ্বংসস্তূপ নয়, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দৃশ্য। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর উপত্যকা জুড়ে বর্বরোচিত আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের হামলা থেকে বাদ যায়নি বিদ্যালয়, ধর্মীয় স্থাপনা, শরণার্থী শিবির, এমনকি হাসপাতালও। যুদ্ধ শুরুর পর ৩৫টির বেশি হাসপাতাল ধ্বংস করেছে ইসরাইলিরা। দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর ইসরাইলিদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু।

গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। যতই দিন গড়াচ্ছে, জনসমর্থন বাড়ছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বের ১৪৭টি দেশ। যা জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ। এই তালিকায় আছে ভ্যাটিকান সিটির ক্যাথলিক চার্চের গভর্নিং বডিও।

বাংলাদেশসহ এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ জনতা ইসরাইলি আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। যুদ্ধ শুরুর পর আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে নতুন করে আরও ১০টি দেশ। যা আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রতিফলন।

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়া ১০ দেশ হলো মেক্সিকো, আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, বাহামা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, জ্যামাইকা এবং বার্বাডোস।

সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার কথা বলেছেন। আগামী জুনে জাতিসংঘের সম্মেলনে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ফ্রান্স সেই পথে হাঁটছে। এটি একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে খুশি করার জন্য করা হবে না। আমাদের বিশ্বাস এটি সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে ফ্রান্স।’

ফিলিস্তিনিদের পক্ষ হয়ে এরইমধ্যে যুদ্ধে জড়িয়েছে ইরান, লেবানন, ইয়েমনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু দেশ ও সংগঠন। যাই ঘটুক না কেন গাজার পাশে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন ইয়েমেনের বাসিন্দারা।

ইয়েমেনের স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘গাজা উপত্যকার ভাইদের সমর্থনে আমরা তাদের পাশে আছি। বিশ্ব দেখুক, জানুক, গাজায় যাই ঘটুক না কেন আমরা তাদের পাশে আছি।’

অন্য একজন বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা একা নয়। আমরা তাদের সাথে আছি। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা বোমাবর্ষণের মুখেও ফিলিস্তিনিরা ইয়েমেনের জনগণকে পাশে পাবে।’

গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, স্লোভেনিয়া পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী এবং ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া ইউরোপের আরও দুই দেশ মাল্টা এবং বেলজিয়ামও স্বীকৃতির বিষয়ে পরিকল্পনা করছে।

এসব দেশের স্বীকৃতির ফলে বিশ্বব্যাপী ক্রমেই অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে ফিলিস্তিনের। বিশেষজ্ঞদের মতে, দখলদারিত্বের জন্য ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

এসএস