যুদ্ধ , মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের পেরে ওঠা নিয়ে শঙ্কা

ইসরাইলের ভূখণ্ডে সরাসরি ইরানের হামলার পর আলোচনায় এসেছে তেহরানের সামরিক সক্ষমতা। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র নেই এই দেশের। পাশাপাশি বিমান বাহিনীর যে যুদ্ধ বিমানগুলো আছে, তার বেশিরভাগই বেশ পুরনো। সেক্ষেত্রে ইসরাইলে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে ইরান পেরে উঠবে না বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।

পুরনো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানকে ফেলে দিয়েছে করুণ পরিস্থিতিতে। যদি আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে ইরানে হামলা করে বসে ইসরাইল, তাহলে শুধু শনিবার রাতের ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধে বিষয়টি সীমিত থাকবে না। এমন আশঙ্কা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স। কূটনৈতিক আর কৌশলগত হামলার খরচ একপাশে রাখলে যদি শক্তিশালী পাল্টা পদক্ষেপ নিতে যায় ইসরাইল, ইরানের অভ্যন্তরে হামলা করতে বেগ পেতে হবে না তেল আবিবকে। এমনটাই বলছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।

এরিয়েল ডিফেন্স ফোর্সের সাবেক কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডোরোন গাভিশ বলেন, 'জানি এখনও হুমকি আছে। ইরানের শক্তি আছে ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন আর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার। এই কারণেই প্রস্তুত থাকতে হবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা জরুরি। আমাদের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশ থেকেও সহযোগিতা নেয়া জরুরি। ক্ষেপণাস্ত্র আর অস্ত্র যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।'

ইরানের গেলো সপ্তাহে ইসরাইলে হামলার দৃশ্যপট প্রমাণ করেছে, তেহরানের হামলা আর ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যবধান। শত শত ড্রোন, ব্যালিস্টিক আর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের ভূখণ্ডের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারেনি। ইরানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের আরেকটি বিষয়, এগুলো রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আদলে তৈরি। স্থানীয়ভাবে যেগুলো তৈরি হয়েছে, সেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও মার্কিন আর রুশ পুরনো যুদ্ধবিমানের আদলে তৈরি।

একটি সিস্টেম ২০১৫ সালে স্থাপন করা হয়েছিলো সিরিয়াতে। যে কারণে ইসরাইলের সেনাদের বছরের পর বছর অভিজ্ঞতা আছে কিভাবে এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে পেরে ওঠা যায়।

ডোরোন গাভিশ আরও বলেন, 'ইসরাইলের পাইলটদের জন্য এয়ার ডিফেন্স চ্যালেঞ্জ। কিন্তু অন্যদিক থেকে আমরা জানি কিভাবে এগুলো প্রতিহত করতে হবে। ইসরাইলি বিমানবাহিনী আর বৈমানিকরা বছরের পর বছর ধরে এসবের প্রশিক্ষণ নেয়। আর তারা অনেক আত্মবিশ্বাসী। যুদ্ধের সিদ্ধান্ত আসবে নির্দেশনা অনুযায়ী। হুমকি মোকাবিলায় সব করবে ইসরাইল।'

বিশ্লেষকরা বলছেন, সংঘাত শুরু হলে ইরান শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, যেখানে আছে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র। এই সংখ্যা তেল আবিবের চেয়ে অনেক কম। ইসরাইলের আকাশসীমা সুরক্ষিত রাখতে সপ্তাহব্যাপী কার্যকর ছিলো এরো সিস্টেম, ডেভিড'র স্লিঙ আর আয়রন ডোম, যা প্রতিহত করেছে হাজার হাজার রকেট।

ইসরাইল বিস্তারিত কিছু না জানালেও বিশ্লেষকদের গবেষণা বলছে, এই হামলা করতে ইরানের খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ কোটি ডলার, কিন্তু ইসরাইল আর মিত্র দেশের এই হামলা প্রতিহত করতে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি ডলার। বুধবারও ইসরাইলের জন্য সামরিক সহায়তার বিল পাশে কংগ্রেসকে চাপ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরাইলের এয়ার ডিফেন্স ফোর্স বলছে, ইরান ও মিত্র দেশগুলো আবারও হামলা করতে পারে এই আশঙ্কায় অস্ত্রের মজুত বাড়াতে রাতদিন কাজ চলছে।

তবে ভবিষ্যতে ইরানকে কি ইসরাইলের একাই মোকাবিলা করতে হবে কিনা, আয়রন ডোম আর ডেভিড'র স্লিঙ যথেষ্ট কিনা তা নিয়ে কোন সংশয় নেই।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর