নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ইসরাইলের তেলআবিবসহ বিভিন্ন শহরে তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে। জিম্মিদের মুক্ত করতে না পারায় নেতানিয়াহু'র নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিক্ষোভকারীরা।
হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে এখনও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বা বিজয় অর্জন করতে পারেনি ইসরাইলি বাহিনী। হামাসের হাতে জিম্মি ইসরাইলিদের মুক্ত করতে না পারায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু'র নেতৃত্ব নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন হাজারো বিক্ষোভকারী। তাদের দাবি, জিম্মিদের অবিলম্বে মুক্ত করতে হামাসের সঙ্গে চুক্তি সই করতে হবে। আর তা না হলে ব্যর্থতার দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে নেতানিয়াহুকে।
রাজধানী তেল আবিবসহ ইসরাইলের বেশ কয়েকটি শহরে আন্দোলন করছেন জিম্মিদের স্বজন ও সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভকারীদের দাঙ্গাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে ইসরাইলি পুলিশ। সড়কে যান চলাচলে বাধা ও পুলিশের নির্দেশনা না মানার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এক বিক্ষোভকারী জানান, 'ইসরাইলি সমাজকে ধ্বংসের জন্য নেতানিয়াহু'র সরকার দায়ী। পাশাপাশি গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর চলা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না।'
আরেকজন জানান, 'সামরিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। দুই পক্ষেরই বহু মানুষ মারা গেছে। আমরা যুদ্ধবিরতি চাই। অবিলম্বে জিম্মিদের ফেরত চাই।'
হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা কিছুতেই থামছে না। ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতিদের ১৮টি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। দুই মিত্র দেশের চতুর্থ দফা যৌথ অভিযানে গুড়িয়ে দেয়া হয় হুতিদের স্টোরেজ সুবিধা, ড্রোন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, রাডার ও একটি হেলিকপ্টার।
জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাবাহী এমভি টর্ম থর নামে একটি তেলের ট্যাংকারে হামলা চালিয়েছে হুতি গোষ্ঠী। যদিও জাহাজটির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছে মার্কিন নৌবাহিনী। গত নভেম্বর থেকে কমপক্ষে ৫৭টি বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতি বিদ্রোহীরা। ব্রিটিশ ও মার্কিন মালিকানাধীন বা তাদের পরিচালিত সব ধরণের নৌযানে হামলা চালানোর নতুন ঘোষণা দিয়েছে হুতি গোষ্ঠী।
সংগঠনটির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারা বলেন, 'ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনি জনগণ ও জাতিকে রক্ষায় লোহিত সাগর ও আরব সাগরে চলাচল করা সব জাহাজ হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে হবে। মার্কিন ও ব্রিটিশদের হামলা মোকাবিলায় সামরিক অভিযান আরও সমৃদ্ধ করবে হুতি গোষ্ঠী।'
এমন পরিস্থিতিতে গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আবার গতি পেয়েছে। তবে থেমে নেই ইসরাইলি হামলা। ফ্রান্সের প্যারিসে যুদ্ধবিরতি নিয়ে মধ্যস্থতা করছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। রাফা অঞ্চলে বোমা ও বিমান হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরাইলি সেনারা। হামলার ভয়ে সেখানে মানবিক সহায়তার ট্রাক ঢুকতে পারছে না। জীবন ধারণের ন্যূনতম সহায়তা পাচ্ছে না গাজাবাসী।