ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্বের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। এ অবস্থায় বহু বছর ধরে ইসরাইল–ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে আদালতে না গিয়ে অন্যকোনো ফোরামে আলোচনা করার কথা বলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্ত গত ৭৫ বছর ধরে অন্য ফোরামেও যুক্তরাষ্ট্রের বাধা, ভেটো ও তাদের ক্ষমতার দাপটের মুখে পড়তে হয়েছে ফিলিস্তিনকে। এতে কোথাও থেকে কোনো সমাধান না আসায় সর্বশেষ আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজের দ্বারস্থ হয় ফিলিস্তিন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আহ্বানে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে গত সোমবার থেকে আইসিজেতে শুনানি চলছে। বুধবারের শুনানিতে বেশিরভাগ দেশের প্রতিনিধিরা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারত্ব অবসানের দাবি জানালেও, বরাবরের মতোই ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আদালতে যুক্তি তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আইন উপদেষ্টা রিচার্ড ভিসেক বলেন, ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত, দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সরে যেতে দেশটিকে আইনিভাবে বাধ্য করা উচিত হবে না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আইন উপদেষ্টা রিচার্ড সি. ভিসেক বলেন, 'কয়েকদিন আগে মিউনিখের নিরাপত্তা সম্মেলনে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জোর দিয়ে বলেছেন, একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেয়েও বেশি জরুরি হলো ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই বিবেচনায় ইসরাইলকে তার দখলকৃত এলাকা থেকে অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা আদালতের উচিত হবে না।'
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও যুক্তরাষ্ট্রের এমন বক্তব্যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ জানান ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকি।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকি বলেন, 'আরও অনেক কিছু আশা করেছিলাম। কিন্তু নতুন কিছু শুনতে পেলাম না। তারা আবার তাদের লিখিত বিবৃতি পুনরাবৃত্তি করেছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যায় যে, তারা আইনিভাবে সমাধান চায় না বরং এখনও তাদের রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে চায়।'
আইসিজের চতুর্থ দিনের শুনানিতে অংশ নেবেন চীন, ইরান, ইরাক, জাপান, মালয়েশিয়াসহ ১১ দেশের প্রতিনিধিরা। নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে চলমান এ শুনানিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে অর্ধশতাধিক দেশ ও তিনটি সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন।