মধ্যপ্রাচ্যের এই জলপথ বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক রুট হলেও বর্তমানে পরিণত হয়েছে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাণিজ্যিক রুটে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলা আতঙ্কে এই জলপথ ব্যবহারে অনীহা বাড়ছে জাহাজ কোম্পানি আর ব্যবসায়ীদের। ইউএন কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের দেয়া তথ্য বলছে, হামলার কারণে দুই মাসে সুয়েজ খাল দিয়ে বাণিজ্য কমেছে ৪২ শতাংশ। জাহাজ চলাচল কমেছে লোহিত সাগর, গাল্ফ অব এডেন আর বাব এল মান্দেব দিয়েও। বাড়ছে কন্টেইনার পরিবহন খরচ।
এরমধ্যেই আবারও মার্কিন বাণিজ্য জাহাজে ড্রোন হামলার দাবি করেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি বাহিনী। স্থানীয় সময় বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ওই পণ্যবাহী জাহাজটিতে হামলা চালায় হুতিরা। সংগঠনটির দাবি, জাহাজটি লাইবেরিয়ান পতাকাযুক্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্র এটি পরিচালনা করছে। গণমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ইয়েমেনের এডেন বন্দরের দক্ষিণে একটি জাহাজে গোলা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। পাল্টা জবাবে ইয়েমেনের ভূখণ্ডেও যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার খবর পাওয়া যায়।
এদিকে অস্থিরতার মধ্যেই বিবাদপূর্ণ লোহিত সাগরের পূর্ব পাশের এডেন উপসাগর ও আরব সাগরে অন্তত এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ভারত। এছাড়া সেসব অঞ্চলে প্রায় ২৫০টি জাহাজে তল্লাশি চালিয়েছে ভারতীয় নৌ সেনারা। মূলত জলদস্যুদের আধিপত্য ঠেকাতে সেখানে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে দেশটি। লোহিত সাগরে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ায় জলদস্যুরা এটির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু দস্যুরা যেন এই সুযোগ না পায় সেটি নিশ্চিতে ওই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত।
এদিকে লোহিত সাগর দিয়ে কন্টেইনারবাহী জাহাজ চলাচল ব্যাহত হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় বন্দরে আটকে আছে ১৪ হাজার ভেড়া ও ২ হাজার গবাদি পশু নিয়ে একটি জাহাজ। সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না এই জাহাজ সমুদ্রে ছাড়বে কিনা। পশুগুলো ৫ জানুয়ারি থেকে জাহাজে আটকে আছে।
যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, পশুগুলো সুস্থ আছে। বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষকে ইসরাইল অভিমুখী জাহাজের রুট পরিবর্তন করতে হয়েছে। হুতি আতঙ্কের প্রভাব পড়ছে পুরো বিশ্ব বাণিজ্যে।