প্রথমে কানাডা, এরপর পানামা খাল, আর সবশেষ ট্রাম্পের দখলের ইচ্ছায় যুক্ত হলো গ্রিনল্যান্ডের নাম। উত্তর আমেরিকার স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপটি ডেনমার্কের অংশ। তাই কোপেনহেগেনে নিযুক্ত ওয়াশিংটনের রাষ্ট্রদূতকে চিঠি পাঠিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যেখানে ট্রাম্প জানান, সারাবিশ্বের সুরক্ষা ও বৈশ্বিক স্বাধীনতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গ্রিনল্যান্ডের সম্পূর্ণ মালিকানা ও দখল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জরুরি।
তবে ট্রাম্পের বক্তব্যে বেজায় চটেছেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। এক বিবৃতিতে মিউট এগডে জানান, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। এমনকি কখনও বিক্রিও করা হবে না। ৮০ শতাংশ বরফে আবৃত বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপটিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
২০১৯ সালেও গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট। তবে, দ্বীপটির প্রধান ও ডেনমার্ক সরকার প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় কোপেনহেগেন সফর বাতিল করেন ট্রাম্প।
বিশ্লেষকদের দাবি, ক্ষমতা গ্রহণের পর যুদ্ধ বন্ধ ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের মতো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে ট্রাম্পের সামনে। বিষয়গুলো থেকে দৃষ্টি সরাতেই এমন বিতর্কিত মন্তব্য করছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রাজনীতি বিশ্লেষক এরিক হ্যাম বলেন, 'প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে বেশ কিছু কঠিন বিষয়ের ওপর কাজ করতে হবে। আমার মতে তিনি জনগণের দৃষ্টি সরাতেই এমন মন্তব্য করছেন। অথচ এসব বিষয়ের সঙ্গে মার্কিনদের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই।'
এর আগে গেল সপ্তাহে কানাডা দখলের আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। প্রস্তাব দেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হবে গ্রেট স্টেট অব কানাডা। যার গভর্নরের দায়িত্ব পালন করবেন জাস্টিন ট্রুডো। হুঁশিয়ারি দেন, শিগগিরই পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এতেই ক্ষান্ত হননি ট্রাম্প, এরইমধ্যে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনার পরিকল্পনা করছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিম ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই এই পদক্ষেপ গ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলেছে।
২০২০ সালেও এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেসময় তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে চীনকে অভিযুক্ত ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তবে বছরব্যাপী প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই ক্ষমতায় আসেন জো বাইডেন। বাতিল করেন সিদ্ধান্ত। বিশ্লেষকদের শঙ্কা, ডাব্লিউ.এইচ.ও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার অর্থ সংস্থাটির তহবিল কমে যাওয়া। এতে বিশ্বব্যাপী ভাটা পড়তে পারে বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধি নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম।