অর্থনীতি , আমদানি-রপ্তানি
বিদেশে এখন
0

বিশ্ববাজারে চাহিদা বেড়েছে পাকিস্তানি চালের

ভারতীয় চালের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববাজারে শূন্যস্থান পূরণ করতে শুরু করেছে পাকিস্তানের চাল। ভারতে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার সুযোগে পাকিস্তানের রেকর্ড রপ্তানি বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি বেড়ে ৫২ লাখ টনে পৌঁছাতে পারে।

চাহিদার তুলনায় বিশ্ববাজারে ঘাটতি থাকায় ১৬ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে ইসলামাবাদ সর্বোচ্চ দামে চাল বিক্রি করতে শুরু করেছে ।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির জেরে অভ্যন্তরীণ বাজারে আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় গেল বছর জুলাই থেকে ধাপে ধাপে চাল রপ্তানিতে বিশ্ববাজারে শীর্ষ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করে।

প্রথমে নন-বাসমতি সাদা চাল রপ্তানি বন্ধ, এরপর সেদ্ধ চালে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, সবশেষ আগস্টে বাসমতি চালেও ন্যূনতম ১২০০ ডলার রপ্তানিমূল্য ধার্য করা হয়।

ভারতের চাল রপ্তানি বন্ধে বিশ্ববাজারে বড় ধরনের ঘাটতি পাকিস্তানের জন্য লাভজনক হয়েছে। শূন্যস্থান পূরণ করতে গিয়ে দেশটির রেকর্ড চাল রপ্তানি বেড়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে এবং পণ্য আমদানির পথও সুগম হচ্ছে।

পাকিস্তানের চাল রপ্তানিকারক সমিতি রিপ জানিয়েছে বিশ্ববাজারে গেল কয়েক মাসে চালের চাহিদা তীব্র হয়েছে। চালের বৈশ্বিক চাহিদার ৪০ শতাংশ পূরণ করা ভারতের রপ্তানি বন্ধে তীব্র ঘাটতি চাহিদা বৃদ্ধির কারণ। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি বেড়ে ৫০ থেকে ৫২ লাখ টনে পৌঁছাতে পারে। যা এক বছর আগেও ৩৭ লাখ টন ছিল।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে উৎপাদন এবং চালের দাম বৃদ্ধির কারণে পাকিস্তানের রপ্তানি কার্যক্রমের গতি বেড়েছে। শুধু গেল ডিসেম্বরে দেশটি সাত লাখ টন চাল রপ্তানি করেছে। চলতি বছর দেশটির বাসমতি চাল রপ্তানি ৬০ শতাংশ বেড়ে সাড়ে নয় লাখ টন এবং নন-বাসমতি চাল রপ্তানি ৩৬ শতাংশ বেড়ে সাড়ে ৪২ লাখ টনে পৌঁছাতে পারে।

অর্থের অংকে চলতি বছর চাল রপ্তানি থেকে পাকিস্তানের আয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে। যা একবছর আগেও ছিল ২১০ কোটি ডলার। পাঁচ শতাংশ সাদা খুদের চাল দেশটি বর্তমানে প্রতি টন ৬৪০ ডলারে বিক্রি করছে। যা আগের বছর ছিল ৪৬৫ ডলার। একইভাবে আধা সেদ্ধ চালের বর্তমানে রপ্তানি মূল্য প্রতি টন ৬৮০ ডলার, যা এক বছর আগে ছিল ৪৮৬ ডলার।

সাধারণত নন-বাসমতির ক্ষেত্রে পাকিস্তানের তুলনায় বেশ কম ভারতীয় চালের দাম। তবে বিশ্ববাজারে ভারতের অনুপস্থিতিতে ক্রেতা দেশগুলো পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকার কারণে উৎপাদন বাড়লেও অভ্যন্তরীণ বাজারে ঊর্ধ্বমূখী পাকিস্তানি চালের দাম।

বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া, সেনেগাল, মালি, আইভরি কোস্ট ও কেনিয়ায় নন-বাসমতি আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কাতার ও সৌদি আরবে প্রিমিয়াম বা উচ্চমানের বাসমতি চাল রপ্তানি করছে পাকিস্তান। ভারতীয় চালের শূন্যস্থান পূরণে পাকিস্তানের পর ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড প্রতিযোগিতায় রয়েছে।