মুক্ত গণমাধ্যম চর্চার ওপর একপ্রকার কষাঘাত অব্যাহত রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজ দেশের গণমাধ্যম সিএনএন, এবিসি ছাড়াও ইতোমধ্যে ট্রাম্পের রোষানলের মুখে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিও। এবার নতুন করে হাঙ্গেরিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি ইউরোপের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সাধারণত ট্রাম্পের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোতে সম্প্রচার কার্যক্রম চালু রয়েছে গণমাধ্যমটির।
কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প সরকারি ব্যয় কমাতে প্রশাসনে ব্যাপক কাটছাঁট আনার ঘোষণা
দেন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে রেডিও ফ্রি ইউরোপকে। এছাড়া, গণমাধ্যমটি বন্ধের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবান। দুর্নীতি, দুর্বল আইনের শাসন ও গণমাধ্যমের ওপর লাইসেন্স আরোপের কারণে নিজ দেশে দারুণ বিতর্কিত তিনি। এমনকি আগামী বছরে দেশটিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগে হওয়া জনমত জরিপে পিছিয়েও আছে অরবান।
গণমাধ্যমটির তত্ত্বাবধানকারী মার্কিন সংস্থা ফর গ্লোবাল মিডিয়ার প্রশাসক কারি লেক সম্প্রতি জানান, করদাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত গণমাধ্যমটিকে হাঙ্গেরিকে অস্থিতিশীল করার জন্য ব্যবহার করা সমীচীন নয়। তিনি আরও জানান, ওয়াশিংটন চায় না যুক্তরাষ্ট্র অর্থায়নে পরিচালিত কোনো গণমাধ্যম হাঙ্গেরির নির্বাচিত সরকারের বিরোধিতা করুক।
তবে কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় ক্ষুব্ধ হাঙ্গেরির নাগরিকরা।
আরও পড়ুন:
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘এর সঙ্গে একমত নই। কেন এটি বন্ধ করা হবে? এটি মতপ্রকাশের পরিপন্থী।’
অন্য একজন বলেন, ‘অরবান মুক্ত গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে। তার ১৫ বছরের শাসনামলে অনেক গণমাধ্যমের লাইসেন্স কেড়ে নেয়া হয়েছে।’
অনেকের অভিযোগ, অরবানের শাসনামলে হাঙ্গেরির সরকারি গণমাধ্যম বাকপ্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়েছে। এছাড়া, অনেক বেসরকারি গণমাধ্যম পুরোপুরি সরকারি নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
১৯৫০ সালে স্নায়ু যুদ্ধের সময় কমিউনিস্ট নেতৃত্বাধীন দেশগুলিতে সম্প্রচারের জন্য চালু হওয়া রেডিও ফ্রি ইউরোপের কার্যক্রম এখনও ইউক্রেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পাশাপাশি মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মুক্ত গণমাধ্যম চর্চার স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয় গণমাধ্যমটি।
১৯৮৯ সালে মধ্য ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো হাঙ্গেরিও কমিউনিজম থেকে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ করে। এরপর ১৯৯৩ সালে রেডিও ফ্রি ইউরোপের কার্যক্রম বন্ধ হয় দেশটি। কিন্তু ২০২২ সালে পুনরায় হাঙ্গেরিতে কার্যক্রম চালু করে গণমাধ্যমটি ।





