হোয়াইট হাউসে মুখোমুখি ট্রাম্প-মামদানি; একসঙ্গে কাজ করা ইচ্ছা তাদের

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জোহরান মামদানি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জোহরান মামদানি | ছবি: সিএনএন
1

হোয়াইট হাউসে মুখোমুখি বসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নিউ ইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল, নিউ ইয়র্কের আবাসন, জননিরাপত্তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন। মামদানির সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। নিউ ইয়র্ক সিটির জন্য একসঙ্গে কাজ করা ইচ্ছাও প্রকাশ করেন এক সময়ের ঘোর মামদানি বিদ্বেষী ট্রাম্প। একই সুর ছিল মামদানির কণ্ঠেও।

নিউ ইয়র্ক সিটি নির্বাচনের আগে দু’জন ছিলেন প্রকাশ্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। একে অপরকে লক্ষ্য করে তীব্র কথার আক্রমণ, বক্তৃতা, অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, সবই ছিল নির্বাচনী রণক্ষেত্রে।

ট্রাম্পের অভিযোগ, মামদানি অত্যন্ত বামঘেঁষা, কমিউনিস্ট। আর মামদানির পাল্টা বক্তব্য, গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বয়ং প্রেসিডেন্টই। এমনকি নিউ ইয়র্কে 'ভুল নেতৃত্ব' আসলে ফেডারেল সহায়তা কমিয়ে দেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

কিন্তু নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বদলে যায় দৃশ্যপট। যোগাযোগ শুরু হয় দুই পক্ষের। সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট নিজে। জবাব দেন নবনির্বাচিত মেয়রও।

জোহরান মামদানি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং আমি আমাদের অবস্থান এবং দৃষ্টিভঙ্গি সর্ম্পকে সচেতন। নিউ ইয়র্কবাসীর সেবা করার ক্ষেত্রে আমাদের উদ্দেশ্য এক। সেই বিষয়ে আলোচনার জন্য আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশংসা করছি।’

স্থানীয় সময় গতকাল (শুক্রবার, ২১ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে হোয়াইট হাউসে পৌঁছান মামদানি। বিকেল তিনটায় ওভাল অফিসে প্রথম সামনাসামনি মুখোমুখি হন দুই নেতা। প্রথম দেখায়ই দু'জনের মুখে সৌজন্যের হাসি, যা ছিল উত্তপ্ত নির্বাচনী ভাষণের ঠিক উল্টো চিত্র।

আরও পড়ুন:

বৈঠক চলে প্রায় এক ঘণ্টা। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল, নিউ ইয়র্কের বাড়তি ভাড়া ও সাশ্রয়ী আবাসন, জননিরাপত্তা ও পুলিশিং সংস্কার, ইউটিলিটি বিল ও জীবনযাত্রার ব্যয়, ফেডারেল গ্রান্টসহ নানা বিষয়। মামদানি তুলে ধরেন, শহরের ব্যয় দ্রুত বাড়ছে, বাসিন্দাদের জীবনযাপন কঠিন হচ্ছে। তিনি ফেডারেল পর্যায়ে আর্থিক সহযোগিতা, হাউসিং প্রোগ্রাম এবং পরিবহনখাতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান।

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সামনে এসে ট্রাম্প বলেন, নিউ ইয়র্কের জন্য গ্রেট মেয়র হতে চলেছেন জোহরান মামদানি। অনেক বিষয়ে দুজনের মতের মিল হয়েছে। নিউ ইয়র্ককে আরও নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করতে দুজন একসাথে কাজ করবেন বলেও জানান প্রেসিডেন্ট।

বৈঠকের শেষ পর্যায়ে শহরের অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, ব্রিজ–টানেল–সাবওয়ে উন্নয়নে ভবিষ্যৎ ফেডারেল অংশীদারিত্ব এবং ব্যবসা-বান্ধব নীতিতে যৌথ কাজের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। উভয় নেতা জানান, রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকলেও নিউ ইয়র্কবাসীর স্বার্থে সহযোগিতা করার জায়গা অনেক।

হোয়াইট হাউসের এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে বহু দিনের রাজনৈতিক দূরত্ব কমে এসেছে, এমনই বিশ্লেষকদের অভিমত। তবে আজকের ইতিবাচক কথোপকথন ভবিষ্যতে বাস্তব কাজে কতটা রূপ নেবে, এ প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।

এসএস