ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

যুক্তরাজ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না অভিবাসনবিরোধী দাঙ্গা

দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আটকের পরও যুক্তরাজ্যে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না অভিবাসনবিরোধী দাঙ্গা। সংখ্যালঘু অভিবাসীর পাশাপাশি পুলিশের ওপরও হামলা চালাচ্ছে উগ্র ডানপন্থিরা। দাঙ্গায় সংশ্লিষ্টদের যেকোনো মূল্যে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। একইসঙ্গে চলমান দাঙ্গাকে উগ্র ডানপন্থিদের দুর্বৃত্তায়ন বলেও অভিহিত করেন তিনি।

এক যুগেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাঙ্গার কবলে পড়েছে যুক্তরাজ্য। অভিবাসনবিরোধী দাঙ্গায় মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। রোববার (৪ আগস্ট) সাউথ ইয়র্কশায়ারের শহর রোথারহ্যামে তাণ্ডব চালায় উগ্র ডানপন্থিরা। শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া হোটেল হলিডে ইন এক্সপ্রেসে চালানো হয় হামলা। ময়লার বিনে আগুন ধরিয়ে তা জানালা ভেঙে ছুঁড়ে ফেলা হয় হোটেলটিতে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আটক করা হয় বহু বিক্ষোভকারীকে।

রোববার ট্যামওর্থ, মিডলসব্রো, বোল্টন, হাল ও ওয়েমাউথসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরের বিক্ষোভ ছিল সহিংস। সপ্তাহব্যাপী দাঙ্গায় এরইমধ্যে আটক করা হয়েছে দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে। এদিন জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার জানান, দাঙ্গাকারীদের আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় যা কিছু করা দরকার, তার সবই করতে প্রস্তুত তিনি। মুসলিমসহ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের কথাও উঠে আসে তার ভাষণে।

কিয়ার স্টার্মার বলেন, 'দেশে বসবাসকারী সবারই নিরাপদে থাকার অধিকার রয়েছে। আমরা দেখেছি, মুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে, হামলা হয়েছে মসজিদ ও সংখ্যালঘুদের ওপর। নাৎসি স্যালুট দেয়া হচ্ছে রাস্তায়। পুলিশের ওপরেও হামলা হয়েছে। একে ডানপন্থি গুন্ডামি বলতেও দ্বিধা করবো না।'

সোমবার (৫ আগস্ট) ডাকা হয়েছে ইমার্জেন্সি রেসপন্স কমিটির বৈঠক কোবরা মিটিং। মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জানাবেন। শান্তি ফেরাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আসতে পারে কঠোর নির্দেশনা। এদিকে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, দাঙ্গায় সংশ্লিষ্ট সকলকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট্টে কুপার বলেন, 'সবার কাছে পরিস্কার করতে চাই, যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের সকলকে বড় মূল্য পরিশোধ করতে হবে। আটক করে আইনের আওতায় আনা, জেল, জরিমানা এমনকি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। সব সম্প্রদায়ের জনগণের শান্তির জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হবে।'

গেল সোমবার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সাউথ পোর্টে ছুরি হামলায় নিহত হন ৩ কিশোরী। হামলাকারী একজন মুসলিম ও শরণার্থী, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এমন গুজব। এরপর থেকেই অভিবাসনবিরোধী উগ্র ডানপন্থীদের দাঙ্গায় কার্যত অচল যুক্তরাজ্য।

tech

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর