এবার মস্কোর হুমকি ঠেকাতে যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনায় এগুচ্ছে ওয়াশিংটন। আর এসব উসকানি মোকাবিলায় পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া।
সম্প্রতি ৯০ হাজার সেনা, ৫০ টির বেশি যুদ্ধজাহাজ, ৮০ টির বেশি যুদ্ধবিমান এবং শত শত ট্যাংক ও সাজোয়া যান নিয়ে ন্যাটোর বড় ধরনের সামরিক মহড়া শুরুর মধ্য দিয়ে দুপক্ষের উত্তেজনা দৃশ্যমান হতে শুরু করে।
এখানেই শেষ নয়- রাশিয়াকে চারদিক থেকে চাপ প্রয়োগে নিজেদের ক্ষমতার পরিধি আরও বাড়াতে রীতিমতো মরিয়া হয়ে উঠেছে উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট-ন্যাটো। এরজন্য যেখানে যা যা করা দরকার তাই করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরইমধ্যে পশ্চিমা জোটটিতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতে হাঙ্গেরিকে দ্রুত অনুমোদনের তাগিদ দিয়েছে দেশটি। একই বিষয়ে প্রথমে বাঁধা দিলেও, পরে সম্মতি দেয়ায় তুর্কিয়ের কাছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ- সিক্সটিন বিক্রির অনুমোদন দিলো যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও আরেক সদস্য দেশ গ্রিসকে এফ-থার্টি-ফাইভ যুদ্ধবিমান দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন পশ্চিমা রাজনীতিক ও সামরিক কর্মকর্তারা। আর বিষয়গুলোকে পশ্চিমা জোটের যুদ্ধ প্রস্তুতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এমনকি আগামী ২০ বছরের মধ্যে পশ্চিমা বেসামরিক নাগরিকদের রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্যও করেন ন্যাটোর শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা অ্যাডমিরাল রব ব্যুয়ের।
রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর এমন টানাপড়েনের মধ্যে আগুনে ঘি ঢালার মতো খবর প্রকাশ করলো ব্রিটিশ সংবাদপত্র টেলিগ্রাফ। যেখানে পেন্টাগনের একটি নথির বরাত দিয়ে দাবি করা হয়- রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝেই ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাজ্যে এমন পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করা হবে যা জাপানের হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার চেয়েও তিনগুণ বেশি শক্তিশালী। এছাড়াও সামরিক কর্মীদের রক্ষার জন্য থাকবে ব্যালিস্টিক শিল্ডসহ নতুন বেশকিছু সরঞ্জাম। এর আগেও যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে মস্কোর সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধের হুমকি কমে যাওয়ায় ২০০৮ সালে তা সরিয়ে ফেলা হয়।
ওয়াশিংটনের পারমাণবিক বোমা স্থাপনের পরিকল্পনাকে উসকানি হিসেবে দেখছে মস্কো। একইসঙ্গে তা মোকাবিলায় পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ক্রেমলিন। এছাড়াও ন্যাটো বড়সড় সামরিক মহড়া এবং জোটে সুইডেনের যুক্ত হওয়ার তোড়জোড়কেও গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেয়া কথা বলছে দেশটি।