যুদ্ধ উসকে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মোদি সরকার!

নরেন্দ্র মোদি | ছবি: সংগৃহীত
0

সীমিত পরিসরে যুদ্ধের শঙ্কা অনিবার্য দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তির মধ্যে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ উসকে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মোদি সরকার। তবে পরাশক্তিধর বলেই পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়ানোর ঝুঁকি নেবে না ভারত বা পাকিস্তান।

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে পর্যটকপ্রিয় ৮৭টি সরকার অনুমোদিত গন্তব্যের ৪৮টিই বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। থমথমে পরিস্থিতিতে হিমালয়ের কোলঘেঁষা মনোরম অঞ্চলটি ছাড়ছেন আতঙ্কিত পর্যটকরা।

জম্মু-কাশ্মীরের স্থানীয় একজন বলেন, ‘বিশাল ক্ষতি গুণতে হচ্ছে আমাদের। শুধু দোকানিরাই নয়, হোটেল, ব্যবসায়ী, গাড়িচালক যারা ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছিলেন এবং ঋণের কিস্তি যাদের দিতেই হবে, সবাই ক্ষতি গুণছে। কাশ্মীরের ৯০ শতাংশ বাসিন্দা পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। তাদের সবার জীবিকা উপার্জনের পথ বন্ধ।’

জম্মু-কাশ্মীরের ট্যুর গাইডদের একজন বলেন, ‘পর্যটকদের গাইড হিসেবে কাজ করতাম আর এতো বেশি ব্যস্ত থাকতাম যে বেছে বেছে গ্রাহক নিতে হতো। আর এখন দেখুন, বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছি।’

আরো পড়ুন:

মূলত যুদ্ধের কালো ছায়া ঘিরে রেখেছে ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরকে। বিতর্কিত অঞ্চলটিতে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে মোদি সরকার। তাৎক্ষণিক পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধের শঙ্কা ঘনীভূত হলেও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ভার বহনের মতো ক্ষমতা নেই কোনো পক্ষেরই।

ব্লুম পাকিস্তানের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শাহিদ মাইতলা বলেন, ‘যুদ্ধ উসকে দিতে ভারত একেবারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তবে যুদ্ধ হলেও তা হয়তো সীমিত পরিসরেই হবে। এটা আসলে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়ার কথা নয়। কারণ দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর। তারা পারমাণবিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ বলেই পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরুর শঙ্কা খুব ক্ষীণ। সীমান্ত পরিস্থিতির অবনতি ও সহিংসতা নিঃসন্দেহে প্রত্যাশিত এবং বর্তমানে ভারত সেটা করছেও।’

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় আগেই বেশ কিছু পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশি। কতদিন চলবে এ লড়াই? মিলছে না আভাস। ভারতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব ব্যাংক ও স্থায়ী সালিশ আদালতসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামের দ্বারস্থ হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে ইসলামাবাদ। দুই দেশের লড়াইয়ের প্রভাব পড়তে পারে প্রতিবেশি দেশগুলোর ওপরও।

আরো পড়ুন:

শাহিদ মাইতলা বলেন, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের কারণে বিপদে পড়তে পারে পুরো দক্ষিণ এশিয়া। ভারত নিজেও ভুগছে। পাকিস্তানের চেয়ে বড় ভোগান্তি পোহাতে হবে ভারতকে। পাকিস্তান যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোর কারণে পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে ১০০ কোটি ডলারের ক্ষতি গুণতে হবে ভারতকে।’

এদিকে, মঙ্গলবারও (২৯ এপ্রিল) টানা পঞ্চম রাতের মতো সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখায় অব্যাহত ছিল দুইপক্ষের গুলিবিনিময়। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এড়াতে বুধবারই ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

এসএস