ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে দু'দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন মোদি

.
এশিয়া , উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দু'দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সফরে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও চীনের প্রভাব নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন তিনি। এছাড়াও ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে দুই নেতার আলোচনায়। সেইসঙ্গে, অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের বিষয়েও আলোচনার আভাস পাওয়া গেছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানান, আঞ্চলিক ইস্যুতে বৈঠকে উঠে আসতে পারে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও।

ক্ষমতায় বসেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে একের পর এক অবৈধ অভিবাসীকে বের করে দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার পরও সম্প্রতি কয়েদি স্টাইলে ১০৪ অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তালিকায় আছে আরও ৪৮৭ ভারতীয় নাগরিকের নাম। ভারত সরকারের তথ্য বলছে, গেল ১৬ বছরে ১৫ হাজারের বেশি ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

ভারতীয়দের ফেরত পাঠানোর পরই মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়সূচি ঘোষণা করলেন পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি। আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদি। পররাষ্ট্র সচিব আরও জানান, অবৈধ অভিবাসীদের জাতীয়তা যাচাই করবে ভারত। এরপরই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ওয়াশিংটন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিস্রি বলেন, 'অবৈধ অভিবাসীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা না হয় এবং তাদের যেনো সাধারণ যাত্রীর মতোই ফেরত পাঠানো হয় তা আলোচনা করা হবে। অবৈধ অভিবাসীদের ওপর যেকোনো ধরনের দুর্ব্যবহারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে ভারত। একটি সুন্দর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা সম্পন্ন করা হবে।'

দুই দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জানান, আঞ্চলিক ইস্যুতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গেও ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে দুই নেতার মধ্যে।

বিক্রম মিস্রি বলেন, 'ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও কূটনৈতিক স্থাপনার নিরাপত্তা দায়িত্ব বাংলাদেশের। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত আছে। এ মুহূর্তে আগে থেকে বাংলাদেশের ইস্যু নিয়ে পূর্বাভাস দেয়া যাবে না। তবে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প-মোদির বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। আমার ধারণা, সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে আসতে পারে।'

এছাড়াও, বিশ্লেষকদের আভাস, দুই নেতার বৈঠকে উঠে আসবে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় পদক্ষেপ। তবে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে, বহুজাতিক অবকাঠামো উদ্যোগ ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর। যা চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের বিকল্প হিসেবে দাঁড় করানো। উচ্চাভিলাষী এই প্রকল্পে বিনিয়োগ থাকবে গৌতম আদানির।

ট্রাম্পের বিতর্কিত শুল্কনীতির উদ্বেগের মধ্যেই মোদির এবারের যুক্তরাষ্ট্র সফর। ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধও গুরুত্ব পাবে আলোচনায়। গেল দুই দশক ধরে সামরিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ক্রমাগতভাবে জোরদার করেছে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন। উন্নত প্রযুক্তির সমরাস্ত্র তৈরিতে মার্কিন প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার চায় ভারত। এছাড়াও, তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনার হতে পারে দুই নেতার বৈঠকে।

ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে দু'দেশের মধ্যে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের মসনদে বসার পর এটি হবে মোদির প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।

এসএস