এই উপত্যকার একপাশে পর্বতশৃঙ্গ অন্নপূর্ণা অন্যদিকে দিগন্তজোড়া সুউচ্চ পাহাড়। আর মাঝখান দিয়ে বয়ে যাচ্ছে গন্ধকি নদী। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোখারা উপত্যকার উত্তর-পশ্চিমে গড়ে ওঠা এই শহরের নামও পোখারা। যার সৌন্দর্য দেখতে প্রতিবছর ভিড় করেন হাজার হাজার পর্যটক।
বড়দিন আর নতুন বছরের ছুটি কাটাতে দেশ বিদেশে ছুটে যাচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। যাদের অনেকেই এবার বেড়াতে এসেছেন হিমালয় কন্যা নেপালের পোখারায়। আর এখানেই সম্প্রতি প্রথমবারের মতো হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক হট এয়ার বেলুন উৎসব। পোখারার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য পাখির চোখে দেখতে এদিন উৎসবে যোগ দেন দেশি-বিদেশি বহু পর্যটক।
একজন পর্যটক বলেন, 'প্রথমবার নেপালে বেড়াতে এসেছি। দারুণ উপভোগ করছি। বেলুনে চড়েও খুব ভালো লাগছে। আয়োজকদের ধন্যবাদ। উপর থেকে যে চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখলাম তার তুলনা হয় না।'
স্থানীয় একজন বলেন, 'এই হট এয়ার বেলুন উৎসবে যোগ দিতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। নেপালে এবারই প্রথম এমন আয়োজন দেখলাম। আগে এ ধরনের আয়োজনে অংশ নেয়ার সৌভাগ্য হয়নি।'
পোখারার আকাশে উড়তে থাকা এই হট এয়ার বেলুনের প্রতি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ নতুন নয়। মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্কের মতো দেশে হট এয়ার বেলুন শো দেখতে ও অংশ নিতে রীতিমতো ঢল নামে পর্যটকদের। প্রথমবারের মতো পোখরার ফেস্টিভালে যোগ দিয়ে এয়ার বেলুনের পাইলট পিয়েটার কুইসত্রা জানান, বিশ্ব সংস্কৃতির এক অভিনব মিশেল ঘটেছে এই নেপালে।
বেলুন উৎসব দেখতে আসা একজন বলেন, 'এক কথায় বললে, দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। বেলুন ওড়ানোর জন্য পোখারার তুলনা নেই। বেলুনে চড়ার জন্য এটাই উপযুক্ত আবহাওয়া। বাতাসের গতিবেগ বেশি না হওয়ায় যে কোনো প্রান্তে বেলুন নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে।'
২৫ দেশের থিমে সাজানো ২৫টি এয়ার বেলুন ছাড়াও ফেস্টিভালের আকর্ষণ ছিল স্থানীয়দের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নেপালি বাদ্যযন্ত্রের তালে স্থানীয়দের নাচ মুগ্ধ করেছে পর্যটকদের।
২৪ ডিসেম্বর ক্রিসমাস ইভে শুরু হওয়া নয় দিন ব্যাপী এই আয়োজনের পর্দা নামবে নতুন বছরের প্রথম দিন পহেলা জানুয়ারি ২০২৫ এ। পৃথিবীর সর্বোচ্চ ১৪ পর্বতশৃঙ্গের আটটিরই দেখা মেলে এই নেপালে। ১৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটারের মধ্যে অন্নপূর্ণা রেঞ্জ থাকায় পর্বত আরোহীদের আনাগোনা লেগেই পোখরার। আয়োজকরা বলছেন, ভ্রমণ পিপাসুদের দুঃসাহসিক অভিযানে উৎসাহিত করতে প্রথমবারের মতো এই বেলুন ফেস্টিভাল আয়োজন করা হয়েছে। তাদের আশা, এর ধারাবাহিকতা দেখা যাবে আগামী বছরেও।