পঞ্চমীর বিকেল। দেবী দুর্গার বোধনের ঠিক আগের দিন এ এক অন্য কলকাতা। পূজার উৎসব, উন্মাদনা ছেড়ে গোটা শহরজুড়ে বইছে আন্দোলনের জোয়ার।
আর জি করের নারী চিকিৎসক হত্যার বিচার, স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি রোধসহ ১০ দফা দাবিতে গত রোববার থেকে আমরণ অনশনে বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে কর্মক্ষেত্রে ইস্তফা দেন আর জি করের ৫০ জন সিনিয়র চিকিৎসক।
পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করে ধর্মতলার মহামঞ্চ পর্যন্ত মহামিছিল করে কলকাতা মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা। চিকিৎসকদের আন্দোলনের শামিল হয় সর্বস্তরের সাধারণ মানুষও।
মহামিছিলটি ধর্মতলায় পৌঁছানোর পর মহামঞ্চ থেকে জানানো হয়, অনশনকারী চিকিৎসকদের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে, এর দায় তাদেরকেই নিতে হবে।
এদিকে পঞ্চমীর দিন কলকাতা পুলিশ মহামিছিলের অনুমতি না দেয়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীদলের নেতারা।
তারা বলছেন, মমতার সরকার রাজ্য পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। তারা মনে করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবেছিলেন পূজার আমেজ শুরু হলে কলকাতাবাসী তিলোত্তমার জন্য বিচার চাইতে ভুলে যাবে।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'এবার স্বাভাবিকভাবে বোঝা যাচ্ছে এই তথ্য প্রমাণ লোপাটের ফলে অনেকে বেঁচে যাবে। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে এর থেকে ভালো আর কি আশা করতে পারি।'
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মাঝে ভেবেছিল ডাক্তাররা আর কয়দিন আন্দোলন চালাবে। সাধারণ মানুষতো পূজা আসলে সব ভুলে যাবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ ডাক্তারের পাশে দাঁড়িয়ে যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এটা একটা ঐতিহাসিক বিষয়।'
শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলন ও অনশন কর্মসূচি নিয়ে নবান্নের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে রাজ্য সরকার বাড়াবাড়ি করলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি আন্দোলনকারীদের।